• facebook
  • twitter
Monday, 7 October, 2024

উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ৩ জেলা, একদিনে মৃত ১৭,দেড় গুণ বাড়ল রাজ্যের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

ভাইরাস বিশেষজ্ঞদের একাংশ করোনা ভাইরাসের আর এক রূপ ডেল্টার ‘আর ভ্যালু' অর্থাৎ, একজনের থেকে ভাইরাস কতজনের দেহে ছড়াতে পারে,তার সম্ভাব্য সংখ্যা ছিল ১.৩।

ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী রাজ্যের কোভিডগ্রাফ। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেল প্রায় দেড়গুণ। তাল মিলিয়ে বেড়েছে মৃত্যুও। লাফিয়ে বেড়েছে সংক্রমণের হারও।

এই পরিসংখ্যানই ঘুম কেড়েছে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, বুধবার রাজ্যের মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৬ লক্ষ ৭৮ হাজার ৩২৩ জন। যার মধ্যে চিকিৎসাধীন বা সক্রিয় করোনা আক্রান্ত ৩৩ হাজার ৪২ জন।

মঙ্গলবারের তুলনায় এই সংখ্যাটা বেড়েছে ৭ হাজার ৫৬৭ জন। এতদিন কলকাতার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছিল। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়ার নামও।

রাতারাতি আড়াই হাজার ছাড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার সংক্রমিতেরর সংখ্যা মঙ্গলবারের রিপোর্ট বলছে, এই জেলায় সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৩৯১। ।

আবার গত ২৪ ঘণ্টায় হাওড়ায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৯৮। এদিন সেই সংখ্যাটা বেড়ে হল ১২৮০। সবমিলিয়ে গত ২৪ ঘণ্টা রাজ্যে মোট কোভিড আক্রান্ত হয়েছে ১৪ হাজার ২২ জন। এদিকে স্বাস্থ্য ভবনের ৬৬ জন করোনা সংক্রমিত।

বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পার্ক স্ট্রিটের এসবিআই ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চও। করোনায় একদিনে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। তার মধ্যে কলকাতার ৫ জন এবং উত্তর ২৪ পরগনার ৫ জন। বাকিদের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়ার ২ জন করে।

বাকিরা মুর্শিদাবাদ, বীরভূম এবং হুগলির বাসিন্দা। প্রতিদিন যে সংখ্যক কোভিড পরীক্ষা করা হয়, তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলে।

অর্থাৎ হিসাব অনুযায়ী, কলকাতায় প্রতি ১০০ জনের করোনা পরীক্ষায় প্রায় ৪৫ জনেরই রিপোর্ট পজিটিভ আসছে। মাত্র সাতদিনে কলকাতা শহরে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার পৌঁছে গেল ৪৪.৫ শতাংশে।

পাশের জেলা হাওড়াতেও দ্রুত বাড়ছে করোনা সংক্রমণ সেখানে সংক্রমণের হার গত এক সপ্তাহে ৩০.১৪ পৌঁছেছে শতাংশে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া ২৯ ডিসেম্বর-৪ জানুয়ারির সংক্রমণ সংক্রান্ত পরিসংখ্যানে এই তথ্য উঠে এসেছে।

এর আগে ২০২১-এর শেষ সপ্তাহের (২৫-৩১ ডিসেম্বর) করোনা পরীক্ষার পরিসংখ্যান পেশ করেছিল কেন্দ্র সেই রিপোর্টে কলকাতায় সংক্রমণের হার ছিল ২৩.৪২ শতাংশ। হাওড়ায় ১০.৭৬ শতাংশ।

সে সময় সারা দেশে সংক্রমণের নিরিখে কলকাতা ছিল দ্বিতীয় স্থানে। হিমাচল প্রদেশের লাহুল-স্পিতি জেলা সংক্রমণের হারের নিরিখে কলকাতা থেকে ১ শতাংশ এগিয়ে ছিল।

২৯ ডিসেম্বর – ৪ জানুয়ারির সংক্রমণের হারের পরিসংখ্যানে কলকাতাকে আরও পিছনে ফেলেছে লাহুল স্পিতি। সেখানে এখন সংক্রমণের হার ৬৬.৬৭ শতাংশ। যদিও এখনও কলকাতা দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে।

রিপোর্ট বলছে, কলকাতা-হাওড়ার পাশাপাশি করোনা সংক্রমণে পশ্চিমবঙ্গের আরও অনেক জেলাও উঠে এসেছে দ্রুত গতিতে। ২৫-৩১ ডিসেম্বরের পরিসংখ্যানে পশ্চিমবঙ্গের শুধু মাত্র ওই দু’টি জেলাতেই কলকাতা এবং হাওড়া) সংক্রমণের হার ছিল ১০ শতাংশ ব তার বেশি।

২৯ ডিসেম্বর ৪ জানুয়ারির সংক্রমণ সংক্রান্ত পরিসংখ্যানে আরও চারটি জেলা চলে এসেছে সেই তালিকায় — পশ্চিম বর্ধমান ১৬.৪১ শতাংশ, উত্তর ২৪ পরগনা ১৪.৭৭ শতাংশ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ১৩.২০ শতাংশ এবং বীরভূম ১০.৬১ শতাংশ।

এই বাড়বাড়ন্তের পিছনে করোনা ভাইরাসের নয়া রূপ ওমিক্রনের কিছুটা ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞদের একাংশ করোনা ভাইরাসের আর এক রূপ ডেল্টার ‘আর ভ্যালু’ (রিপ্রোডাক্টিভ রেট) অর্থাৎ, একজনের থেকে ভাইরাস কতজনের দেহে ছড়াতে পারে, তার সম্ভাব্য সংখ্যা ছিল ১.৩।

সেখানে ওমিক্রনের ‘আর ভালু’ ২.৮ থেকে ৩ পর্যন্ত হতে পারে। এই তথ্য থেকেই স্পষ্ট ওমিক্রন যে ডেল্টার তুলনায় বেশি ছোঁয়াচে।