এদিন প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন ‘দ্য স্টেটসম্যান গ্রুপ’-এর বিপণন বিভাগের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান কলকাতা শাখার প্রধান এবং এই অনুষ্ঠানের রূপকার গোবিন্দ মুখার্জি। এছাড়াও মঞ্চে ছিলেন রূপ বিশেষজ্ঞা এবং অনুষ্ঠানের গ্রুমিং পার্টনার কেয়া শেঠ, ছিলেন সমিন্দার সিং, জোনাল হেড-পাঞ্জাব অ্যান্ড সিন্দ ব্যাঙ্ক, সঙ্গীতশিল্পী রেশমী মিত্র, অভিনেতা শান্তিলাল মুখার্জী প্রমুখ।
বিচারকদের আসনে ছিলেন কেয়া শেঠ, শান্তিলাল মুখার্জী ছাড়াও অভিনেত্রী চান্দ্রেয়ী ঘোষ, ছবি পরিচালক রেশমী মিত্র। এদিন মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করে অনুষ্ঠানকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলেন সঙ্গীতশিল্পী অমৃতা দত্ত এবং দেব চৌধুরী। ‘দ্য স্টেটসম্যান গ্রুপ’ আয়োজিত এই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার পৃষ্ঠপোষকতা করেছে তন্তুজ, পাঞ্জাব অ্যান্ড সিন্দ ব্যাঙ্ক, মৃগনয়নী, সূর্য কুমার মোদক, এবং কমলিকা।
সাারা বছর ধরেই নানা ধরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে ‘দ্য স্টেটসম্যান’ এবং ‘দৈনিক স্টেটসম্যান’ পত্রিকার। স্টেটসম্যান গ্রুপের বছর শুরু হয় ঐতিহ্যপূর্ণ ভিনটেজ কার র্যালি দিয়ে। এটি ছাড়াও আয়োজন করা হয়ে থাকে কয়েকটি প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানের। এর মধ্যে অন্যতম রুরাল রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড। এছাড়াও ‘বেস্ট ফেস, বেস্ট ড্রেস’ – ‘দ্য স্টেটসম্যান গ্রুপ’ আয়োজিত এই প্রতিযোগিতা এবছর পা দিয়েছে চতুর্থ বর্ষে।
স্টেটসম্যান সংবাদপত্রে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আবেদনের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল দুর্গাপুজোর আগে। ১৮ বছর বয়স থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মহিলাদের পুজো প্যান্ডেলের সামনে তোলা ছবি পাঠাতে বলা হয় এই বিজ্ঞাপনে। প্রচুর আবেদন জমা পড়ে স্টেটসম্যান সংবাদপত্রের অফিসে। বাছাইয়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে মোট ১২ জনকে নির্বাচিত করা হয়।
‘বেস্ট ফেস বেস্ট ড্রেস’ প্রতিযোগিতায় মূলত জোর দেওয়া হয়েছিল সহজাত, স্বাভাবিক সৌন্দর্যের উপর। সুন্দরী প্রতিযোগিতা মানেই ভারী মেক-আপের আড়ালে নিজেকে ঢেকে দেওয়া নয়। হালকা মেক-আপ, রুচিশীল অথচ চোখকাড়া পোশাক ছিল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। প্রত্যেক প্রতিযোগীর মধ্যেই ছিল স্বাভাবিকতার স্ফূরণ। চেহারার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে পোশাকের রঙ নির্বাচন ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
নিজেদের মঞ্চে উপস্থাপন করা, নিজেদের পরিচয় দেওয়ার পালা শেষ হওয়ার পর একে একে ১২ জন প্রতিযোগীকে প্রশ্ন করেন দর্শকাসনে বসা প্রথম সারির বিচারকরা। বিচারকদের ধারালো প্রশ্নের উত্তরও ছিল বুদ্ধিদীপ্ত। স্টেটসম্যানের বিপণন বিভাগের কর্মী গৌতমী বসু জানান, এমন কিছু প্রশ্নের ভিত্তিতে প্রতিযোগীদের মধ্যে থেকে সেরাদের বেছে নেওয়া হয়, যে সব প্রশ্নের উত্তরের মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পায় তাঁদের বুদ্ধিমত্তা, নিজেকে ব্যক্ত করার দক্ষতা, এবং সামাজিক সচেতনতা।
বিচারকদের দাঁড়িপাল্লায় যিনি প্রথম স্থানটি জিতে নিলেন, তিনি আয়ুশী বিশ্বাস। জানালেন, এত বড় মঞ্চে এই প্রথম স্বীকৃতি। নিজের ভালোবাসার জায়গাটিকে যাচাই করে নেওয়ার সুযোগ পেয়ে অত্যন্ত খুশি তিনি। প্রথম রানার আপ হয়েছেন রাজিতা দেব। তিনি স্টেটসম্যান পত্রিকাকে অনেক ধন্যবাদ জানান এমন একটি মঞ্চে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য। দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছেন জয়িতা মাইতি। জানালেন, দীর্ঘদিন অসুস্থতার পর মনোবল হারিয়েছিলেন, স্টেটসম্যান পত্রিকার মঞ্চ তাঁকে আবার আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী দেব চৌধুরী, তাঁর সঙ্গে সঙ্গত করেছেন পিয়ালি পাঠক। গোটা অনুষ্ঠানটি পরিচালনার পাশাপাশি শিল্পীর অনুরোধে তাঁর সঙ্গে গলাও মেলান পিয়ালি। এরপরই ঘোষণা করা হয় বিজেতাদের নাম। তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ফুলের স্তবক, মেমেন্টো ছাড়াও আরও কিছু উপহার।
প্রথম রানার আপ রাজিতা দেবকে পুরস্কৃত করেন পাঞ্জাব অ্যান্ড সিন্দ ব্যাঙ্কের জোনাল ম্যানেজার সমিন্দার সিং। মৃগনয়নীর তরফে কে.কে. চ্যাটার্জী, ম্যানেজার-ইস্টার্ন জোন, পুরস্কার তুলে দেন দ্বিতীয় রানার আপ জয়িতা মাইতির হাতে। আর এদিনের সেরা বিজয়ীর মাথায় মুকুট পরিয়ে দেন গ্রুমিং পার্টনার তথা রুপ বিশেষজ্ঞা কেয়া শেঠ। প্রথম তিনজন বিজয়ী ছাড়াও বাকি ৯ প্রতিযোগীর হাতেও ‘দ্য স্টেটসম্যান গ্রুপ’-এর তরফে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
সবশেষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সম্মানিত অতিথি, পৃষ্ঠপোষক সংস্থা, বিচারক, প্রতিযোগী ও তাঁদের পরিবার এবং দর্শকদের সবাইকে তাঁদের অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান ‘দ্য স্টেটসম্যান গ্রুপ’-এর বিপণন বিভাগের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান গোবিন্দ মুখার্জী। অনুষ্ঠানটি সফল ও সর্বাঙ্গীন সুন্দর করে তুলতে যে পৃষ্ঠপোষক সংস্থাগুলি সহায়তা করেছিল, অনুষ্ঠানে উপস্থিত সেইসব সংস্থার তরফে উপস্থিত প্রতিনিধিদেরও ধন্যবাদ জানিয়ে সম্মানিত করেছেন তিনি।