এইচআরবিসি: পদত্যাগ শুভেন্দুর, নতুন চেয়ারম্যান কল্যাণ

এইচআরবিসি-র চেয়ারম্যান পদ থেকে পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী’কে সরিয়ে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Written by SNS Kolkata | November 27, 2020 6:53 pm

শুভেন্দু অধিকারী এআইটিসি (@SuvenduAdhika20/Twitter)

বাঁকুড়া সফর থেকে ফেরার পরে বড় সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশন (এইচআরবিসি)-র চেয়ারম্যান পদ থেকে পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী’কে সরিয়ে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই পদের দায়িত্ব দেন তিনি। হঠাৎ করে শুভেন্দুকে এই পথ থেকে সরিয়ে দেওয়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। 

প্রসঙ্গত, শুভেন্দু অধিকারী বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজনীতিতে সবথেকে আলােচিত ব্যক্তিত্ব। তাঁর একাধিক বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট হয়েছিল যে তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের মতভেদ তৈরি হয়েছে। এরপরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তবে কি বিজেপিতে যােগ দিচ্ছেন এই হেভিওয়েট নেতা, নাকি নিজস্ব রাজনৈতিক দল করবেন তিনি। এই নিয়ে তর্ক বিতর্ক চলছিল। এর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত। 

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগেই নাম না করে শুভেন্দু অধিকারী’কে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি না থাকতেন তাহলে মিউনিসিপ্যালিটির বাইরে আলু বেচতে হত। এখন প্রশ্ন শুভেন্দু অধিকারী নিজেই পদ ছেড়েছেন নাকি তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই প্রশ্নের উত্তরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আমাকে এই এইচআরবিসি-র চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আমি যতদূর জানি শুভেন্দু অধিকারী নিজেই এই পদ থেকে সরে গিয়েছে। 

যদি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা সঠিক হয় সেক্ষেত্রে এটি শুভেন্দু অধিকারীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এরপর ধাপে ধাপে তিনি অন্যান্য পদ এবং মন্ত্রিসভার পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারেন বলে জল্পনা শুরু হয়েছে এমনটাই। 

শুভেন্দু অধিকারী বিগতদিনে একাধিক সভায় বলেছিলেন যে কোন পদের লােভ তাঁর নেই। তিনি সাধারণ মানুষের পাশে থাকার জন্যই রাজনীতি এইচআরবিসি চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে বড় বার্তা দিতে চেয়েছেন তিনি, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। 

এদিকে এই পদক্ষেপের পর শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে উঠছে বড় প্রশ্ন। এইচআরবিসি-র চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর তৃণমূলে থাকা শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষে কি আদৌ সম্ভব! আর যদি তিনি তৃণমূল ছাড়েন সেক্ষেত্রে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান কী হবে প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে। 

অন্যদিকে, গত মঙ্গলবার শুভেন্দু অধিকারী প্রসঙ্গে কলকাতায় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন তৃণমূলের প্রথম সারির তিন নেতা। বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারীর মতাে একজন নেতা তৃণমূল ত্যাগ করলে দলেরই ক্ষতি, এমনটাই মনে করছেন দলের অধিকাংশ। এমনকী পেশাদার ভােট কুশলী প্রশান্ত কিশােরের দাবি, শুভেন্দু অধিকারী দলে থাকলে তৃণমূলের লাভ। কিন্তু এই আলােচনার পরেই শুভেন্দুর এইচআরবিসি-র চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করা অতম্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।