পশ্চিমবাংলায় নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর রাজ্যের চার দলের প্রতিক্রিয়া

প্রথম দফা ১১ এপ্রিল ২ টি আসনে, ১৮ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় ৩ টি আসনে, ২৩ এপ্রিল তৃতীয় দফায় ৫ টি, ২৯ এপ্রিল চতুর্থ দফায় ৮ টি, ৬ মে পঞ্চম দফায় ৭ টি আসনে, ১২ মে ষষ্ঠ দফায় ৮ টি এবং ১৯ মে সপ্তম দফায় ৯ টি আসনে নির্বাচন হবে।

Written by SNS March 11, 2019 9:58 am

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র (Photo: iStock)

নিজস্ব প্রতিনিধি – পশ্চিমবাংলায় এবার ৭ দফায় লোকসভা নির্বাচন করার কথা ঘোষণা করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। যা স্বাধীনতার পর থেকে বর্তমান সময়ে একপ্রকার নজিরবিহীন। প্রথম দফা ১১ এপ্রিল ২ টি আসনে, ১৮ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় ৩ টি আসনে, ২৩ এপ্রিল তৃতীয় দফায় ৫ টি, ২৯ এপ্রিল চতুর্থ দফায় ৮ টি, ৬ মে পঞ্চম দফায় ৭ টি আসনে, ১২ মে ষষ্ঠ দফায় ৮ টি এবং ১৯ মে সপ্তম দফায় ৯ টি আসনে নির্বাচন হবে। এর আগে ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবাংলায় ৭ দফায় ভোট গ্রহন করেছিল নির্বাচন কমিশন। যদিও লোকসভা নির্বাচনে এত দীর্ঘ সময় ধরে ভোট গ্রহনের নজির নেই। ২০০৯ সালে ৩ দফায় এবং ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ৫ দফায় ভোট গ্রহন পর্ব চলেছে। নির্বাচন কমিশনের তরফে পশ্চিমবঙ্গে ৭ দফা নির্বাচন ঘোষণার পরই সাংবাদিক বৈঠক করে নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা। তিনি বলেন, এই প্রথম বাংলায় ৭ দফায় লোকসভা নির্বাচন হতে চলেছে।

পশ্চিমবাংলায় অরাজগতার রাজনীতি চলছে। ভোট সঠিকভাবে হয় না। ভোটারদের হরণ করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলি এই অভিযোগগুলি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছিল। সেই বাস্তবতা নির্বাচন কমিশন অনুভব করেছেন। ভয় পেয়েছে তৃণমূল তাই তাদের পা ঠকঠক করে কাঁপছে। তাই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারছে না। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হলেই বিস্ফোরণ হবে। তৃণমূল ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করেছে ‘রমজান মাসে ভোট’। প্রশ্ন তুলে রাহুলবাবু বলেন এর আগে কি রামজান মাসে ভোট হয়নি? নির্বাচন কমিশনের ৭ দফা নির্বাচন ঘোষণার বিষয়ে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, রামজানের সময় নির্বাচন করা হচ্ছে, উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং বাংলায়। যার কারণ সংখ্যালঘু ভাইবোনেরা যেন ভোট দিতে না পারে। নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছে তৃণমূল। মানুষের হৃদয়ে আসছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে বিজেপিকে কটাক্ষ করে ফিরহাদ হাকিম বলেন, বাংলায় আইনশৃঙ্খলা আছে। অন্যজায়গার মত বাংলায় দাঙ্গায় মানুষ মারা যান না। বাংলায় আইনশৃঙ্খলা নষ্ট করছে বিজেপি এবং সিপিএম। আর সেন্ট্রাল ফোর্স নিয়ে বিজেপির লোকজন লাফাচ্ছে। একটি পরিসংখ্যান নিয়ে তিনি বলেন আগেও ২০১৪ ও ২০১৬-এর নির্বাচনে সেন্ট্রাল ফোর্স এসেছে। নির্বাচন হয়েছে। মানুষ তৃণমূলকে বিপুল ভোট দিয়ে নির্বাচনে জয়ী করেছে। সেন্ট্রাল ফোর্সের সঙ্গে যারা থাকে তারা মুর্খের সঙ্গে বাস করে। বাংলার পুলিশ সারা বছর মানুষের সঙ্গে থাকে। শান্ত বাতাবরণের কৃতিত্ব রাজ্য পুলিশের। বাংলা ভয় পায় না, বাংলা লড়াই করতে জানে। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান তথা সিপিএম নেতা বিমান বসু বলেন, এক নির্বাচন ক্ষেত্রের  ভোটার তো সব জায়গায় ভোট দিতে যাবেন না। যেখানে যার নির্বাচন ক্ষেত্র সেখানে ভোট দেবেন, এখানে সমস্যার কোনও কারণ নেই বলেও জানান। ১৩ মার্চ বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে বলেও জানান বিমানবাবু।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের আবেদন সাধারণ মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে নির্ভয়ে তাঁদের মতাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সে ব্যাপারটি কমিশনের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করতে হবে। ৫ মে থেকে রামজান মাস শুরু হচ্ছে। এই মাসের মধ্যেই লোকসভা নির্বাচনের তিনটি পর্ব অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। যেহেতু একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠী তাঁদের বিশেষ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে নিযুক্ত থাকেন তাই বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রে সকলের অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করতে ‘রামজান’ মাসের ভিতর নির্বাচনের দিনক্ষণগুলি বিবেচনারও আবেদন রাখছি বলে জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।