• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

আবাস যোজনার বিতর্ক রুখতে ১১ দফার নির্দেশিকা জারি রাজ্যের

রাজ্যের সমস্ত সমীক্ষকদের এই নির্দেশিকা মেনে কাজ করতে বলা হয়েছে।

প্রতীকী চিত্র

আবাস যোজনা নিয়ে ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে। সেই বিতর্ক রুখতে, ১১ দফার গাইডলাইন প্রকাশ করল রাজ্য। রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। আবাস যোজনা তথ্য যাচাই নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই বিতর্ক চলছিল। সেই বিতর্ক সামলানোর জন্যই এই নির্দেশিকা বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এর আগে এই তালিকা যাচাইয়ের জন্য এসওপি তৈরি করেছিল রাজ্য। সেই তালিকায় ১৪ নভেম্বর ক্রস চেকিংয়ের কাজ শেষ হওয়ার কথাও ছিল। এছাড়াও ২০ নভেম্বর উপভোক্তাদের তথ্যপঞ্জি-সহ প্রভিশন্যাল বা প্রাথমিক চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করার কথাও ছিল সংশ্লিষ্ট দপ্তরের।
কিন্তু এর মাঝেই বেশ কিছু জায়গায় আবাস সমীক্ষা নিয়ে বিক্ষোভের ঘটনা সামনে আসে। সে কারণেই এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজ্যের সমস্ত সমীক্ষকদের এই নির্দেশিকা মেনে কাজ করতে বলা হয়েছে।

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক যে সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকায় কি কি বলা হয়েছে।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকায় বলা হয়েছে,
প্রথমত, আবাসের তালিকা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে হবে। সবাইকে জানাতে হবে যে, তালিকায় যে নাম রয়েছে, সেগুলো যাচাই করা হচ্ছে। বিশেষ করে পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্ট এবং সিএমআরও বা অভিযোগ নিষ্পত্তি সেল থেকে পাওয়া নামগুলিকে যাচাই করতে হবে। দ্বিতীয়ত, সমস্ত বাতিল হওয়া নাম নতুন করে যথাযথভাবে পরীক্ষা করতে হবে। পাকা বাড়ির কী আইনি বাখ্যা রয়েছে, তা জানতে হবে। সমীক্ষকদের কোনও সন্দেহ হলে, তা যথাযথভাবে পরীক্ষা করে দেখতে হবে। দেখতে হবে, যাতে কোনওভাবে একজনও যোগ্য ব্যক্তি বঞ্চিত না-হয়। তৃতীয়ত, অভিযোগ নিস্পত্তি সেল বা সিএমআরও থেকে আসা সমস্ত নাম ও যে তথ্যগুলির খোঁজ মিলছে না-তা গুরুত্ব সহকার যাচাই করতে হবে।
চতুর্থ, উপভোক্তাদের নাম ,ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও আইডি-সহ সমস্ত তথ্য নথিভুক্ত করার সময় বিশেষ যত্ন নিতে হবে। এজন্য প্রতিটি স্তরে নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে কোনও ভুল হলে, সঙ্গে সঙ্গে তা সংশোধন করা যায়।
পঞ্চম, পুলিশ স্বাধীনভাবে তালিকায় থাকা নাম যাচাই করবে। তাঁদেরকেও তালিকা দিয়ে সবরকম সহযোগিতা করতে হবে।
ষষ্ঠ,প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতিগ্রস্থদের বাড়ির তালিকা তৈরি হবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের নির্দেশিকা মেনে। সমীক্ষকরা সরজমিনে যা যাচাই করে দেবে, স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রতিনিধিকে জানাতে হবে কী পদ্ধতিতে তাঁদের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে সবটা স্পষ্ট করে দিতে হবে৷ দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িগুলোর জন্য নতুন স্কিমে কিছু করা হচ্ছে না। সপ্তম, এব্যাপারে মানুষকে সচেতন করতে পর্যাপ্ত প্রচার চালাতে বলা হয়েছে। যাতে কোনওভাবে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি না-হয়। এলাকায় মাইকিং করে প্রচার করার কথা বলা হয়েছে। অষ্টম, নামের তালিকা যাচাইয়ের পর সমস্ত তথ্য এবং উপভোক্তা নির্বাচন ও বাতিলের পক্ষে ছবি এবং ভিডিও সংগ্রহ করে রাখতে হবে। যাতে যে কোনও সময় যাচাই করতে হলে, সহজেই বুঝে নেওয়া যায়। নবম, গ্রাম পঞ্চায়েত ও গ্রাম সংসদ এলাকা ভিত্তিক তালিকা বিশ্লেষণ করতে হবে। যাচাই সমীক্ষা চালানোর সময় কোনও এলাকায় সবচেয়ে বেশি বা কম নাম বাতিল হয়েছে বা গৃহিত হয়েছে, তার তালিকা রাখতে হবে। পরে তার ভিত্তিতে একটা নমুনা সমীক্ষা করা হবে। ২০২২ সালে সমীক্ষার ভিত্তিতে এই তালিকা নিয়ে যাচাই করা হচ্ছে। তাই তালিকা যাচাইয়ের সময় কোথাও বেশি বা কম নাম বাতিল বা গৃহীত হলে যথাযথ বাখ্যা যেন থাকে। দশম, সুপার চেকিং ব্যবস্থাকে আরও নিবীড়বাবে যাচাইয়ের কাজ করতে হবে। সমীক্ষকদের সরেজমিনে গিয়ে সমস্ত তথ্য পুঙ্খাপুঙ্খভাবে যাচাই করতে হবে।
একাদশ, গ্রাম সভা ও ব্লক লেভেল কমিটির অনুমোদন-সহ সমস্ত নথি যথাযথ সংরক্ষণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট নির্দেশে এ-ও বলা হয়েছে যে, মনে রাখতে হবে, যেকোনও ধরনের গাফিলতি বা ইচ্ছাকৃত ভুল সহ্য করা হবে না।

Advertisement

Advertisement