আইনে পরিণত হওয়ার প্রায় ৭ মাস পর ওয়াকফ সংশোধনী আইন মেনে নিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের ওয়াকফ সম্পত্তি সংক্রান্ত সব তথ্য কেন্দ্রের পোর্টালে আপলোড করতে সব জেলার জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলাশাসকদের এই চিঠি পাঠিয়েছেন সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের সচিব পি বি সালিম। চলতি বছর ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সব অ–বিতর্কিত ওয়াকফ সম্পত্তির তালিকা ‘উমিদ’ পোর্টালে আপলোড করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশের ভিত্তিতেই তড়িঘড়ি তথ্য আপলোডের কাজ শুরু হয়েছে।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, জেলাশাসকদের পাঠানো চিঠিতে বেশ কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। ইমাম-মোয়াজ্জেম ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠক করে গোটা আপলোড করার প্রক্রিয়া জানাতে হবে। অ–বিতর্কিত সম্পত্তির তথ্য আপলোড হবে। কোনও বিতর্কিত সম্পত্তির তথ্য এখনই আপলোড করা হবে না। প্রযুক্তিগত সাহায্যের জন্য ফেসিলিটেশন সেন্টার খোলা হবে।
সেখানে প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য কর্মী নিয়োগ করা হবে। কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে সংখ্যালঘু দপ্তরের রাজ্যস্তরের অফিসগুলোর সিনিয়র অফিসাররা জেলায় জেলায় পরিদর্শনের জন্য যাবেন। রাজ্যের ৮টি জেলায় ইতিমধ্যেই এই নিয়ে হেল্প ডেস্ক চালু করা হয়েছে। প্রতিদিন দুপুর ২টো থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্টেট ওয়াকফ বোর্ডের পক্ষ থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলাশাসক যাতে ব্যক্তিগতভাবে এই কাজের উপর নজর রাখেন সেই বিষয়ে চিঠিতে জোর দেওয়া হয়েছে।
ওয়াকফ আইন, ১৯৯৫-এর একাধিক ধারা চলতি বছরে সংশোধন করেছে ভারত সরকার। ওয়াকফ আইন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, মুসলিমদের ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ তিনি চলতে দেবেন না। তাঁরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এখানে থাকছেন। তাঁদের সুরক্ষা দেওয়া সরকারের কর্তব্য। এই আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েও শেষমেশ বিশেষ স্বস্তি পায়নি রাজ্য। ফলে অবশেষে রাজ্যে সংশোধিত ওয়াকফ আইন কার্যকর করতে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। যদিও এই আইনের কিছু বিষয় এখনও সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে।
রাজ্য সরকারের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে প্রায় ৮২ হাজার ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে। এই সম্পত্তিগুলি ৮ হাজারের বেশি ওয়াকফ এস্টেটের অন্তর্ভুক্ত। ওয়াকফ সংশোধনী আইনের থ্রিবি ধারা অনুযায়ী, একটা সময়সীমার মধ্যে দেশের সমস্ত নিবন্ধিত ওয়াকফ সম্পত্তির তথ্য কেন্দ্রীয় ডেটাবেসে নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক। সেই সময়সীমা আগামী ৫ ডিসেম্বর শেষ হচ্ছে। তাই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তথ্য আপলোড করার কাজ শেষ করতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য।
Advertisement