বাড়ি ফিরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন সোনালি বিবি। তাঁর প্রতি গভীর আস্থা রাখলেন তিনি। শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশের মাটিতে পা রাখলেও শনিবার সন্ধ্যায় বীরভূমের নিজের বাড়িতে ফিরতে পেরেছেন সোনালি। পাইকর গ্রামের বাড়িতে পাড়া-প্রতিবেশীদের ভিড় উপচে পড়ে। বাড়িতে ফিরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। ভাবী সন্তানের নামকরণ যাতে মুখ্যমন্ত্রী করেন সেই ইচ্ছা ব্যক্ত করেন সোনালি। তিনি বলেন, ‘যাঁর জন্য বেঁচে ফিরলাম, সেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, আমার সন্তানের নাম যেন তিনিই দেন। আমি তাঁর কাছে ঋণী, কৃতজ্ঞ।‘
অন্তঃসত্ত্বা সোনালি এবং তাঁর ৮ বছরের সন্তান সাবির সহ ছয়জনকে দিল্লি পুলিশ বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করে। বাংলায় কথা বলায় ‘বাংলাদেশি’ দাগিয়ে অসম সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে তাঁদের ঠেলে দেওয়া হয়। সেখানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলে ঠাঁই হয় তাঁদের। তারপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সোনালি বিবিদের দেশে ফেরাতে তৎপরতা শুরু হয়। সঙ্গে চলে আইনি লড়াই। প্রায় ৮ মাস পর মালদহের মহদিপুর সীমান্ত দিয়ে নাবালক সন্তানকে নিয়ে নিজের দেশে শুক্রবার ফেরেন সোনালি। তবে বাংলাদেশে রয়ে গিয়েছেন সোনালির স্বামী-সহ চারজন। তাঁদের নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই বাড়ি ফিরে খুশি চেপে রাখতে পারেননি সোনালি।
Advertisement
শুক্রবার সোনালি ও তাঁর ছেলেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। শনিবার দুপুরে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে বীরভূমের পাইকর গ্রামে নিয়ে আসা হয়। বীরভূমে পৌঁছনোর পর এদিন পাইকর এলাকায় অ্যাম্বুল্যান্সেই তাঁকে সংবর্ধনা দেন স্থানীয়রা। এরপর সোনালিকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে বসেই তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী আমাকে আবার নতুন জীবন দিয়েছেন। তাই আমার ছেলে হোক বা মেয়ে – নাম যেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই দেন।‘ হাসপাতালে সোনালির সঙ্গে ছিলেন তাঁর বাবা ভদু শেখ এবং মা জ্যোৎস্নাহারা বিবি। তাঁকে হাসপাতালে দেখতে যান সাংসদ সামিরুল ইসলাম। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এবং তাঁর তৎপরতায় সোনালি বিবির দেশে ফেরা সম্ভব হয়েছে।
Advertisement
সোনালিকে ফেরানো প্রসঙ্গে শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘ন্যায়কে ঢেকে রাখা যায় না। কলকাতা হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা সঠিকভাবে মানা হয়নি। সব প্রমাণ দেখানোর পরেও তাঁকে ফেলে আসা হয় বাংলাদেশে। কেন্দ্রে চোখে কালো চশমা এঁটেছিল। শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলায়, এমন হেনস্থা মানা যায় না।‘ মন্ত্রী শশী পাঁজা ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, ‘সব নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কেন্দ্র এসব পরিবারকে হেনস্থা করেছে। সোনালিরা শুধু কষ্টই পাননি, হেনস্থারও শিকার হয়েছেন।‘
Advertisement



