বুধবার বাংলাদেশের গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে তৈরি হয় চূড়ান্ত উত্তেজনা। এনসিপির নেতৃত্ব দাবি করেছে গোপালগঞ্জের পুরসভা পার্কে তাদের সমাবেশ চলাকালীন কিছু সশস্ত্র আওয়ামী লীগের সমর্থক স্থানীয় দলনেতা মহম্মদ পিয়ালের নেতৃত্বে মঞ্চ ভাঙচুর করতে শুরু করেন। তাঁরা পুলিশের গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ।
এছাড়াও জেলাশাসকের বাড়িতেও হামলা করা হয়। এই হামলার জেরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড, শেল এবং গুলি চালায়। এই সংঘর্ষে প্রাণ হারান চারজন ব্যক্তি। গুলিবিদ্ধ ও আহতের সংখ্যা আরও বেশি। বৃহস্পতিবার সকালে উত্তেজনা খানিক কমলেও বিধ্বস্ত হয়ে রয়েছে শেখ হাসিনার জেলা গোপালগঞ্জ। রাস্তাঘাটে ছড়িয়ে রয়েছে ইট, পাথর, বাঁশ। স্থগিত রয়েছে এইচএসসি পরীক্ষা। বন্ধ বেশ অনেকগুলি বাসরুট। সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে রয়েছেন।
Advertisement
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী জানিয়েছেন যে, আওয়ামী লীগের কর্মীরা এই আক্রমণ চালিয়েছন। সংঘর্ষ আটকাতে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী গুলি চালায়। গুলি এবং গ্রেনেড হামলার ফলে প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন। মৃত ব্যক্তিরা হলেন সদর উপজেলার ভেড়ার বাজারের বাসিন্দা ইমন, টুঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা সোহেল মোল্লা, উদয়ন রোডের বাসিন্দা দীপ্ত সাহা এবং কোটালিপাড়ার অধিবাসী রমজান কাজী। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, টুঙ্গিপাড়ায় বসবাসকারী একজন ব্যক্তি গুলির আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এছাড়া আরও ৮ জন গুলির আঘাতে জখম হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে যে, আওয়ামী লীগের কর্মী এবং সমর্থকেরা তাঁদের উপর গুলি চালিয়েছিল। পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের উপর গুলি চালানোর জন্য।
Advertisement
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বুধবার রাত থেকে কার্ফ্যু জারি করা হয় গোপালগঞ্জে। সেনাবাহিনী এলাকায় টহল দিতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার সকালে পরিস্থিতি খানিকটা শান্ত হলেও মানুষের মনে আতঙ্ক রয়েই গিয়েছে।
সেনাবাহিনীর গুলিতে মানুষের এই নির্মম মৃত্যুকে ‘পরিকল্পিত গণহত্যা’ বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগ।
Advertisement



