রবীনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া ভবানীপুরে, ভাইয়ের মৃতদেহ আগলে দিদি

২০১৫ সালে রবিনসন স্ট্রিটের কঙ্কালকাণ্ড সজোরে নাড়া দিয়েছিল শহরবাসীকে। করোনা সংক্রমণে যখন কাঁপছে গোটা বিশ্ব, তখন ফিরে এল কঙ্কালকাণ্ডের আতঙ্ক।

Written by SNS Kolkata | April 5, 2020 3:15 pm

২০১৫ সালে রবিনসন স্ট্রিটের কঙ্কালকাণ্ড সজোরে নাড়া দিয়েছিল শহরবাসীকে। করোনা সংক্রমণে যখন কাঁপছে গোটা বিশ্ব, তখন ফিরে এল কঙ্কালকাণ্ডের আতঙ্ক। ভাইয়ের মৃতদেহ আগলে বসে রইলেন দিদি। । ঘটনাটি ঘটেছে ভবানীপুরে।

সুত্রের খবর, ভবানীপুরের মাধব চ্যাটার্জি লেনে ভাই শান্তনু দে’র (৪৮) সঙ্গে থাকতেন মহাশ্বেতা দে। লকডাউন চলায় কিছুদিন আগে চাল, ডাল কিনে মহাশ্বেতাদেবীর ফ্ল্যাটে যান তাদের কেয়ারটেকার। সেই সময় বাড়ির ভেতর থেকে কটু গন্ধ পান তিনি। যদিও এই গন্ধ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মহাশ্বেতাদেবী তা এড়িয়ে যান।

এদিকে কেয়ারটেকারের বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় তিনি স্থানীয় কাউন্সিলর অসীম বসুকে পুরো বিষয়টি জানান। কাউন্সিলর কেয়ারটেকারকে বিষয়টির ওপর নজর রাখতে নির্দেশ দেন। ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে আসতে থাকা পচা গন্ধ আরও তীব্র হওয়ায় কেয়ারটেকার ফের একবার কাউন্সিলরকে জানান।

তারপরই শুক্রবার চাল-ডাল নিয়ে কেয়ারটেকারকে মহাশ্বেতা দেবীর ফ্ল্যাটে পাঠান অসীমবাবু। খাবার দিতে গিয়েই ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কটু গন্ধ পান কেয়ারটেকার। মহাশ্বেতাদেবীকে বারংবার গন্ধ নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও তিনি কোনও উত্তর দেননি বলে জানিয়েছেন ওই কেয়ারটেকার।

এরপরই প্রতিবেশী ও কাউন্সিলরকে খবর দেন কেয়ারটেকার। সকলে মিলে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করতেই চমকে ওঠেন। তারা দেখেন, ফ্ল্যাটের এক কোণে একটি পচনশীল মৃতদেহ। তৎক্ষণাৎ ভবানীপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। শুক্রবার রাতেই এই দেহ এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ ।

সুত্রের খবর, শান্তনুবাবু এবং মহাশ্বেতাদেবী দু’জনেই অবিবাহিত ছিলেন। পড়শিদের সঙ্গেও খুব বেশি মেলামেশা করতেন না তারা। কীভাবে শান্তনুবাবুর মৃত্যু হল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ । পাশাপাশি, মানসিকভাবে মহাশ্বেতাদেবী আদৌ সুস্থ কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে সেই বিষয়টিও।

পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বেশ কয়েকদিন আগেই শান্তনু দে’র মৃত্যু হয়েছিল। এদিকে কেন ভাইয়ের মৃতদেহ আগলে বসেছিলেন মহাশ্বেতাদেবী, তা নিয়ে জেরা করা হলে বিভিন্ন রকম উত্তর দিচ্ছেন তিনি। কখনও বলছে লকডাউন চলায় কাকে বিষয়টি বলনে, তা ভেবে পাননি। কিছুক্ষণ পর বলেন, ভাই তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেত, দেখভাল করত। তাকে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে কী করবেন বুঝে উঠতে পারেননি তিনি। মোটের উপর ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে রহস্য ক্রমেই ঘনাচ্ছে।