• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ, পুজোর উদ্বোধন ‘বয়কট’ গেরুয়া শিবিরের

পুজোর সময় কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শহরে এলেও তাঁরা কোনও পুজো উদ্বোধনে যোগ দেবেন না। রেলের একাধিক প্রকল্প উদ্বোধনের উদ্দেশ্যে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও কলকাতা এসেছেন।

প্রতীকী চিত্র

আরজি কর হাসপাতালে পড়ুয়া চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভের আগুন। দেশ-বিদেশেও প্রতিবাদের ঢেউ। এই আবহে পুজো উদ্বোধনেও প্রতিবাদের আঁচ। এ বছর দুর্গাপুজোয় কলকাতা বা রাজ্যের কোনও পুজোর উদ্বোধনে অংশ নেবেন না কেন্দ্রীয় নেতা বা মন্ত্রীরা। রাজ্যজুড়ে হওয়া প্রতিবাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

শুরু থেকেই জুনিয়র চিকিৎসকরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এ বারের পুজোতেও আন্দোলনের রেশ থাকবে। শারোদৎসবেও রাজ্যবাসীকে আন্দোলনে নামার ডাক দিয়েছিলেন তাঁরা। এ বছরের পুজো যে বিচারের পুজো, আন্দোলনের পুজো তা নতুন করে প্রমাণ করেছে মহালয়ার প্রাক-সন্ধ্যায় কলকাতার বুকে প্রতিবাদ মিছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বঙ্গবাসীকে উৎসবে ফেরার বার্তা দিলেও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি যে উৎসব থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকবে তা বার বার স্পষ্ট করেছে। সেই পথে হাঁটছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও।

Advertisement

কলকাতা বা বাংলার কোনও প্রান্তের পুজোর উদ্বোধনে কেন্দ্রীয় নেতা বা মন্ত্রীদের অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও পশ্চিমবঙ্গের নেতা-মন্ত্রীদের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর মোদীর মন্ত্রিসভায় রয়েছেন। তাঁরা নিজেদের এলাকায় পুজো উদ্বোধন করতে পারবেন বলেই জানিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পাশাপাশি উদ্বোধনের ক্ষেত্রে সবুজ সংকেত পেয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি পরিষদীয় দলের সদস্য এবং সাংসদেরাও।

Advertisement

২০২৩ সালে অযোধ্যার রাম মন্দিরের আদলে গড়ে তোলা হয়েছিল সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের দুর্গাপুজোর মণ্ডপ। কলকাতা পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সজল ঘোষের উদ্যোগে এই পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রতি বছরই এই পুজোয় থাকে জাঁকজমক, থাকে দর্শনার্থীদের ঢল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও হয় আকর্ষণীয়। তবে এ বছর কোনও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান না করারই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথমে অমিত শাহ বা জেপি নাড্ডার উদ্বোধনের কথা থাকলেও আরজি কর কাণ্ডের আবহে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ বলেন, ‘চিকিৎসক বোনকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এ বার আমরা কোনও উদ্বোধন পর্ব রাখছি না’। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকেই দর্শনার্থীদের জন্য খুলে যাবে মণ্ডপের দরজা।

অন্যদিকে কাঁথির নান্দনিক ক্লাবের পুজোর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে অধিকারী পরিবার। এই পুজোর অন্যতম কর্তা কাঁথির সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারী। জানা গিয়েছে, প্রথমে কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে দিয়ে এই পুজোর উদ্বোধনের কথা চিন্তাভাবনা করা হয়েছিল। কিন্তু পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ান খোদ সৌমেন্দু অধিকারীই। আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে এই পুজোর উদ্বোধনে আসছেন না কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। পরিবর্তে আগামী ৬ অক্টোবর এই পুজোর উদ্বোধন করবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।

বিজেপি সূত্রে খবর, পুজোর সময় কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শহরে এলেও তাঁরা কোনও পুজো উদ্বোধনে যোগ দেবেন না। রেলের একাধিক প্রকল্প উদ্বোধনের উদ্দেশ্যে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও কলকাতা এসেছেন। কিন্তু তিনিও কোনও পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাবেন না বলেই জানা গিয়েছে। এছাড়াও আগামী সপ্তাহেই কলকাতায় আসার কথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের। তিনিও কোনও উদ্বোধনে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছে গেরুয়া শিবির।

Advertisement