মহানায়ক উত্তম কুমারের চল্লিশতম প্রয়াণ দিবস স্মরণে

মহানায়ক উত্তম কুমার (File Photo: IANS)

‘শাওন রাতে যদি স্মরণে আসে মােরে, বাহিরে ঝড় বহে, নয়নে বারি ঝরে’- দেবদাস  ছবিতে উত্তম কুমারের লিপে এই গানের কলিটাই হয়ে পারে, মহানায়কের এপিটাফ। কারণ সত্যিই শ্রাবণ মাস এলেই উত্তম কুমারের কথা স্মরণে আসে আমাদের।

বাহিরে ঝড় উঠুক বা না-ই উঠুক, নয়নে বারি ঝরে। মহানায়ক উত্তম কুমারের মৃত্যু উৎসবে প্রতিবছর চব্বিশে জুলাই তাঁর মৃত্যুদিনে স্মরণ উৎসবের আয়ােজন করা হয়। এবছর তার চল্লিশতম প্রয়ান দিবস। এই দিনটিকে মনে রেখে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়ােজন করা হয়েছে। তবে শুধু ঘােষিত আড়ম্বরেই নয়, নীরবে নিভৃতে উত্তম স্মরণের আয়ােজনও বড় কম নয়।

ভবানীপুরে উত্তম কুমারের বাড়িতে এখন তাঁর শয়নকক্ষে খাটের ওপর ঝিন্দের বন্দি‘র উত্তম কুমারের মস্ত ফোটোগ্রাফটা ফুলের মালায় সাজিয়ে রাখা হয় বিছানার ওপর। যেন এক্ষুণি তিনি বলে উঠবেন, ‘মেজাজটাই তাে আসল রাজার…।’


তাঁর ব্যবহৃত ঘরের সােফার ওপর, দেওয়ালে বিভিন্ন মুডের উত্তম কুমারের ফোটোগ্রাফ। টালিগঞ্জে উত্তম কুমারের মেক-আপ রুমেও তাঁর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, আয়নার সামনে টিপটে রাখা থাকে চায়ের কাপ। প্রয়াণের চল্লিশ বছর পরেও এই নিয়মে কোনও ব্যাত্যয় ঘটে না।

সরকারি অনুষ্ঠানের আয়ােজন, টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপাের কাছে উত্তমের পুর্ণাবয়ব মূর্তিতে মাল্যদান তাে হয়ই। এছাড়া উত্তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে প্রতিবারের মতাে এবারও কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব–২০১৯ হচ্ছে। এবার এই উৎসব চলবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত। নন্দন প্রেক্ষাগৃহে প্রতিদিন উত্তম কুমার অভিনীত চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে দু’টি করে।

এই উৎসবের আয়ােজক মহানায়ক প্রতিষ্ঠিত শিল্পী সংসদ। ২৪ জুলাই নন্দনে (এক) বিকেল তিনটে ও সন্ধে ছ’টায় যথাক্রমে নতুনতীর্থ  ও দেয়া নেয়া । পরের দিন থেকে, নন্দনে (টু) ২৫ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই প্রতিদিন দিনে দু’টো করে সিনেমা দেখানাে হবে। এগুলি হল মেমসাহেব, অভয়ের বিয়ে ; হােটেল স্নাে ফক্স, রােদন ভরা বসন্ত ; যদুবংশ, বিপাশা ; বিরাজ বউ, অগ্নিসংস্কার, কাল তুমি আলেয়া ; শিল্পী, কঙ্কাবতীর ঘাট ; সাড়ে চুয়াত্তর, বন পলাশীর পদাবলী 

এছাড়া সন্ধেয় রবীন্দ্রসদনে অনুষ্ঠিত হবে সঙ্গীত সন্ধ্যা এবং দেওয়া হবে ‘উত্তম কলারত্ন পুরস্কার’। এই অনুষ্ঠানের আয়ােজন করেছে বাংলা চলচ্চিত্র প্রচার ও প্রসার সমিতি। সেখানে উপস্থিত থাকবেন টলিগঞ্জের একাধিক শিল্পীরা।

এইসব আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে এখনও তাঁর মৃত্যুর চল্লিশ বছর পরেও ভেজা শ্রাবণে উত্তম স্মরণে ভেজে আমাদের মন, ভেজে সেলুলয়েডের পর্দা, টালিগঞ্জের স্টুডিওপাড়া। কে জানে, হয়তাে ভেজে ভবানীপুরে উত্তম কুমারের বাড়ির বাইরে তাঁর নাম লেখা লেটারবক্সটাও !