পাগড়ি বিতর্কে ব্যবস্থা নিতে মমতাকে আর্জি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর

বিতর্কের সূত্রপাত বৃহস্পতিবার বিজেপির ‘নবান্ন চলাে’ অভিযানে। ওই কর্মসূচি চলাকালীন বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের বচসা বাধে।

Written by SNS Kolkata | October 11, 2020 10:32 pm

বৃহস্পতিবার বিজেপির ‘নবান্ন চলাে’ অভিযান চলাকালীন বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের বচসা বাধে। (Photo: IANS)

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির নবান্ন অভিযানে শিখ সম্প্রদায়ের এক জনের পাগড়ি খােলা নিয়ে বিতর্কে মুখ খুললেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমন্দির সিংহ। ওই কাণ্ডে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি। একই সুর শােনা গিয়েছে শিরােমণি অকালি দল-এর প্রধান সুখবীর সিংহ বাদলের গলাতেও। 

বিতর্কে ইতি টানতে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার তত্ত্ব অবশ্য জোরাল ভাবেই খারিজ করে দিয়েছে রাজ্য পুলিশ। পুলিশ কর্তাদের একাংশের মতে, ওই ঘটনা নিয়ে অকারণে জলঘােলা করা হচ্ছে। 

বিতর্কের সূত্রপাত বৃহস্পতিবার বিজেপির ‘নবান্ন চলাে’ অভিযানে। ওই কর্মসূচি চলাকালীন বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের বচসা বাধে। কোথাও কোথাও তা ধস্তাধস্তির চেহারা নেয়। সেই সময়ের একটি ভিডিয়াে ভাইরাল হয় সেদিন সন্ধ্যা থেকেই। 

প্রসঙ্গত, বিজেপির ওই কর্মসূচি শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই পাগড়ি খুলে যাওয়ার ভিডিয়াে টুইট করেছিলেন দিল্লির জংপুরের বিজেপি নেতা ইমপ্রীত সিংহ বক্সি। তারপর থেকে যত সময় গড়িয়েছে, ততই ভার্চুয়াল জগতে স্রোতের মতাে ছড়িয়ে পড়েছে ওই টুইট। আর তা নিয়ে জলঘােলাও শুরু হয়েছে। 

ইমপ্রীতের দেওয়া ভিডিওটি দেখে মমতার কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য টুইটে আবেদন জানিয়েছিলেন হরভজন। ভিডিওতে দেখা যায় এক শিখ যুবককে আটক করছে পুলিশ। তখন টানাহ্যাচড়ায় তার পাগড়িটি খুলে যাচ্ছে। সেই পাগড়ি খােলার ঘটনা ঘিরেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। শুক্রবার তা নিয়ে মুখ খােলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার হরভজন সিংহ। তাঁর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ময়দানে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর। 

পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর তরফে তাঁর সংবাদমাধ্যম উপদেষ্টা রবীন ঠাকরাল টুইটারে লিখেছেন, ‘এটা ঠিক হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ এক শিখ যুবককে কীভাবে হেনস্থা করছে, গ্রেফতারের সময় পাগড়ি খুলে দিচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করায় সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।’ 

পাগড়ি বিতর্কের প্রথম ধাপেই অবশ্য শিখ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার বিষয়টি খারিজ করে দিয়েছিল রাজ্য পুলিশ। এখনও সেই বক্তব্যেই অটল হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট বা রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তারা। শুক্রবার রাতেই রাজ্য পুলিশ বলবিন্দরের ঘটনা সম্পর্কে বিজেপির নবান্ন অভিযানের একটি ভিডিয়াে প্রকাশ করেছে।

সেটির কথা উল্লেখ করে রাজ্য পুলিশের দাবি ‘ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময়ে ওই যুবকের পাগড়ি আপনা থেকেই খুলে গিয়েছে। কোনও পুলিশ কর্মী পাগড়ি খুলে দেননি।’ টুইটে আরও বলা হয়েছে, ‘পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সমস্ত ধর্মকে শ্রদ্ধা করে।’ 

পুলিশের দাবি ঘটনার পরেই পুলিশ বলবিন্দরকে তার পাগড়িটি পরে নিতে বলে এবং গ্রেফতারের পর গাড়িতে তােলার সময় তিনি পাগড়ি পরেও নেন। সেই ছবিও পুলিশ টুইটারে প্রকাশ করেছে।