খড়গপুর পুর এলাকায় বেআইনি বহুতল রুখতে সক্রিয় হল পুলিশ। কলকাতা পুর এলাকায় নির্মীয়মান একাধিক বহুতল হেলে পড়ার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বেআইনি বহুতল খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশের উপর। নবান্নে এক প্রশাসনিক বৈঠকে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুর আধিকারিকদের তীব্র ভর্ৎসনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পরেই অবৈধ বহুতল নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী।
অবৈধ বহুতল বন্ধ করার কাজে এবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর শহরে সক্রিয় হল পুলিশ। নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরে বহুতল নির্মাণকারীদের কাছ থেকে বহুতল নির্মাণের জন্য অনুমোদিত নকশা চেয়ে পাঠানো হয়েছে। নির্মাণকারী সংস্থাগুলি অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী কাজ করছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখবে পুলিশ, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। সবুজ সংকেত না দেওয়া অব্দি সমস্ত বহুতল নির্মাণকারীদের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
খড়গপুর পুর এলাকায় বিভিন্ন সময়ে একাধিক বহুতলের বিরুদ্ধে পুর বিধি না মেনে বহুতল তৈরীর অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু কোন ক্ষেত্রেই পুরসভা, জোরালো কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। নিয়ম অনুযায়ী, নকশা অনুমোদন করার পরেই নির্মাণ কাজ শুরু হওয়া উচিত। কিন্তু অনেক নির্মাণকারী সংস্থা নকশা অনুমোদনের অপেক্ষা না করে কাজ শুরু করে দেন। একটি বহুতল তৈরি হলে চারদিকে যে ছাড় দেওয়া উচিত, সেই ছাড় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেওয়া হয় না। বহুতলের নিকাশিব্যবস্থা কীভাবে হবে সেই ব্যাপারেও পুরসভার পক্ষ থেকে নজর দেওয়া হয় না। পুরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টররা এলাকা ঘুরে এলেও চোখ বন্ধ করেই থাকেন। বহুতলগুলি নিজেদের আবাসিকের জন্য পুরসভার ঘরে টাকা জমা দিয়ে অগভীর নলকূপ বসিয়ে নেন। কিন্তু বিভাগীয় দপ্তরের কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণ করা হয় না । খড়গপুর পুর এলাকায় বেশ কিছু বাণিজ্যিক মল তৈরি করা হয়েছে যাদের পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। তার ফলে ওই সব মলের সামনের রাস্তায় যানজট বিশেষত উৎসবকালীন সময়ে ব্যাপক আকার ধারণ করে। পুরসভা এইসব বিষয়েও নজরদারি করে না, এমনটাই অভিযোগ। পুরসভার বিরুদ্ধে সবচেয়ে মারাত্মক অভিযোগ, চারতলা বা পাঁচতলার অনুমোদন নিয়ে অনেক বহুতল নির্মাণকরী ছ’তলা-সাততলা অব্দি নির্মাণ করেন। পুরো কাজটাই করা হয় পুরসভাকে ‘ম্যানেজ’ করে। আচমকা কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়ায় তাই যথেষ্ট ফাঁপরে পড়েছে নির্মাণকারী সংস্থাগুলি।
মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠকে রাজনৈতিক কোনও হস্তক্ষেপ হলে সেই সব রাজনৈতিক নেতাদের কালো তালিকাভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই এই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ শাসকদলের কোনও নেতাই।