• facebook
  • twitter
Thursday, 11 December, 2025

রাজ্যের ভোটার তালিকা থেকে ৫৮ লক্ষের বেশি নাম বাদ পড়তে চলেছে

শুনানির জন্য কাদের ডাকা হবে?

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

পশ্চিমবঙ্গের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের আগে রাজ্যে বাদ পড়তে চলা ভোটারের সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়ছে। নির্বাচন কমিশনের চলতি এসআইআর প্রক্রিয়ার এনুমারেশন ধাপ শেষ হওয়ার পরে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ৫৮ লক্ষ ৮ হাজার ২০২ জনের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়তে চলেছে। খসড়া তালিকা প্রকাশে এই সংখ্যা সামান্য ওঠানামা করতে পারে। তবে বড়সড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলেই কমিশন সূত্রের দাবি।

কমিশন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, রাজ্যে বর্তমানে ২৪ লক্ষ ১৮ হাজার ৬৯৯ জন ভোটারকে মৃত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া ১২ লক্ষ ১ হাজার ৪৬২ জন ভোটারের কোনও হদিশ মিলছে না। সংশ্লিষ্ট বুথ স্তরের আধিকারিক তিন বা তার বেশি বার কোনও ভোটারের বাড়ি গিয়ে খুঁজেও সন্ধান না পেলে তাঁদের ‘নিখোঁজ’ ভোটারের তালিকায় ফেলা হয়েছে।

Advertisement

এদিকে রাজ্যে স্থানান্তরিত ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লক্ষ ৯৩ হাজার ৮৭জন। একাধিক জায়গার ভোটার তালিকায় নাম থাকায় তাঁদের একটি জায়গায় রেখে বাকি জায়গা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫৭৫ জনকে ‘ভুয়ো ভোটার’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফলে তাঁরাও বাদ পড়ছেন খসড়া তালিকা থেকে। এ ছাড়া ৫৭ হাজার ৫০৯ জনকে রাখা হয়েছে ‘অন্যান্য’ শ্রেণিতে, তাঁদের নামও খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়তে চলেছে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, আগামী ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত হবে রাজ্যের খসড়া ভোটার তালিকা। সেই তালিকা নিয়ে কোনও অভিযোগ বা ভুলত্রুটি থাকলে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কমিশনে জানাতে হবে। সেগুলি খতিয়ে দেখে শুনানি, তথ্যপ্রমাণ যাচাই এবং পর্যালোচনার ভিত্তিতে ২০২৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।

কমিশন সূত্রে আরও খবর, ভোটারদের তথ্য বিশ্লেষণ করে তিনটি বিভাগে ভাগ করা হয়েছে। সেগুলি হল– নিজস্ব ম্যাপিং, প্রজিনি ম্যাপিং এবং নন-ম্যাপিং। প্রথমত, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় মোট ২ কোটি ৯৩ লক্ষ ৬৯ হাজার ১৮৮ জন ভোটারের নাম ছিল। এঁদের নিজস্ব ম্যাপিংয়ের মধ্যে ফেলা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, যাঁদের নাম ২০০২ সালের তালিকায় নেই, কিন্তু বাবা-মা বা আত্মীয়ের নাম রয়েছে, তাঁদের প্রজিনি ম্যাপিংয়ের মধ্যে ফেলা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে মোট ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ ৫৫ হাজার ৯৩৯ জন ভোটার। তৃতীয়ত, যাঁদের নিজেদের নাম বা কোনও আত্মীয়ের নামও ২০০২ সালের তালিকায় নেই, তাঁদের নন-ম্যাপিং তালিকায় ফেলা হয়েছে। এই মুহূর্তে রাজ্যে এমন ৩০ লক্ষ ভোটার রয়েছে। খসড়া তালিকা প্রকাশের পর শুধুমাত্র এঁদেরই শুনানির জন্য ডাকা হবে। তাঁদের তথ্যপ্রমাণ ও নথি যাচাই করে দেখা হবে। তবে ক্ষেত্রবিশেষে প্রথম দুই শ্রেণির ক্ষেত্রেও তথ্য নিয়ে সন্দেহ থাকলে শুনানিতে হাজিরার নোটিশ দেওয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য, গত ৪ নভেম্বর থেকে দেশের ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তার মধ্যে সাতটি রাজ্যের জন্য সময়সীমা বাড়ানো হলেও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বাড়ানো হয়নি। পূর্বনির্ধারিত সময়সীমা অনুযায়ীই এই রাজ্যের এসআইআর প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement