সন্দেশখালির শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলার অন্যতম সাক্ষী ভোলানাথ ঘোষের গাড়ি দুর্ঘটনা কাণ্ডে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ধৃত ব্যক্তি শেখ শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। অন্যদিকে, রবিবার ভোলানাথ ঘোষের বাড়ির সামনে পাহারা দিতে দেখা গিয়েছে কয়েকজন পুলিশকে। ন্যাজাটে গাড়ি দুর্ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন ভোলা। তাঁকে খুন করার পরিকল্পনা হয়েছিল বলে অভিযোগ তাঁর। ভবিষ্যতেও এরকম ঘটনা ঘটতে পারে। সেই কারণে তাঁর বাড়ির সামনে নিরাপত্তা দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন।
গত বুধবার সকালে আদালতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ভোলানাথ ঘোষের গাড়ি। গাড়িতে ছিলেন ভোলানাথ ঘোষ, তাঁর ছেলে সত্যজিৎ ঘোষ এবং গাড়িটি চালাচ্ছিলেন শাহানুর মোল্লা। ন্যাজোটের বয়ারমারি পেট্রোল পাম্পের সামনে বাসন্তি হাইওয়েতে উল্টো দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের ধাক্কায় গাড়িটি নয়ানজুলিতে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সত্যজিৎ ও শাহানুরের। ভোলানাথকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। প্রথম থেকেই ভোলানাথ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ ছিল, পরিকল্পনা করে খুনের ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।
এর পিছনে রয়েছেন শেখ শাহজাহান। তাঁর বিরুদ্ধে মামলার সাক্ষী হওয়ায় এর আগে একাধিকবার ভোলানাথকে হুমকি দিয়েছিলেন শাহজাহান ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা। এবার তাঁকে খুনের চেষ্টা করা হল। ঘটনার পরের দিন বৃহস্পতিবারই শেখ শাহজাহান সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে রাজবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে খুনের মামলা দায়ের করেন ভোলানাথ। শনিবার এই ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করে ন্যাজাট থানার পুলিশ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন উত্তম সর্দার ওরফে সুশান্ত এবং রুহুল কুদ্দুস শেখ। গত বছর সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনায় উত্তমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
ন্যাজাট–কাণ্ডে তদন্তে নেমে আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম গোলাম হোসেন মোল্লা। পুলিশ সূত্রে খবর, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হাসনাবাদ থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতের বাড়ি হাটগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের শিমুরআঁটি এলাকায়। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে ধৃত কারও নামই ভোলানাথ ঘোষের দায়ের করা এফআইআর–এ নেই। এফআইআর–এ নাম থাকা কাউকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি। শেখ শাহজাহান জেলে রয়েছেন। ঘাতক ট্রাকটির চালক পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। বাকি অভিযুক্তদের থানায় হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে।
দুর্ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভোলা। ছেলেকে হারিয়ে মর্মাহত তিনি ও তাঁর পরিবার। কিন্তু তার মধ্যেও আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না তাঁর। সেই কারণে রবিবার থেকে তাঁর বাড়ির সামনে কয়েকজন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
Advertisement