আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ উর্ধ্বমুখী হলেও মৃত্যুর হার ক্রমশ নিম্নগামী। সেই সঙ্গে রাজ্যে করোনা পরীক্ষার সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। মঙ্গলবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে জানান, রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৯৩ জন। ফলে মঙ্গলবার মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪,০০৯ জন। গত চব্বিশ ঘন্টায় নতুন করে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের। যার অর্থ সরাসরি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২১১তে।
অন্যদিকে গত চব্বিশ ঘন্টায় ৭২ জন সেরে উঠেছেন। অর্থাৎ এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন মোট ১,৪৮৬ জন। অর্থাৎ একই সঙ্গে করোনা রোগমুক্ত হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। কমছে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা। এই বিষয়টি আশার আলো দেখালেও উল্টোদিকে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
Advertisement
গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যে করোনা সংক্রমণের গতি বাড়ছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসছে সেই খবর। যে মালদহ জেলাতে একসময় একজনও করোনা আক্রান্ত ছিল না, সেখানে এখন একাধিক করোনা আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর নেপথ্যে রয়েছে গত কয়েকদিন ধরে ভিনরাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরা।
Advertisement
পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফিরলে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়বে, এরকম আশঙ্কা ছিলই। পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরলে তাদের গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না, এমন খবরও ছিল। কিন্তু মানবিক কারণে যেসব শ্রমিকরা ভিন রাজ্যে অত্যন্ত কষ্টে ছিলেন, তাদের ঘরে ফেরানো ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না।
রাজ্য তথা জেলা প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছিল, পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফিরেও যাতে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। কারও শরীরে জ্বর বা করোনার কোনও উপসর্গ থাকলে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে। তারপর নিয়ম মেনে আইসোলেশনে থাকতে হবে। এজন্য পরিযায়ী শ্রমিকদের আত্মীয় পরিজনদেরও দায়িত্ব নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু আম্ফান বিপর্যয়ে সেইসব নিয়ম কতদূর পালন করা গিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আম্ফানের সময় মঙ্গলবার পর্যন্ত শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন আসা বন্ধ থাকলেও আজ থেকে আরও ২২৫ টি ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর জন্য। এখনও পর্যন্ত ১৯ টা ট্রেন রাজ্যে এসে পৌঁছেছে।
ভিনরাজ্য থেকে আসা ট্রেনগুলির জন্য সুচি বানানো হয়েছে অন্য রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা বলে। কিছু কিছু এই রাজ্যে শ্রমিকদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাজ্যের মুখ্যসচিব এই বিষয় নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে কথা বলছেন।
পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর জন্য কিছুটা সময় চাওয়া হলেও তা পাওয়া যায়নি। এমনিতেই আম্ফানে রাজ্যের বিপর্যস্ত অবস্থা। তার ওপরে এখন প্রতিদিনই পরিযায়ীরা ঘরে ফিরছেন। ফলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে আলাপনবাবু বলেন, বর্তমানে রাজ্যে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে। এটা একটা ভালো দিক। করোনা পরীক্ষার লক্ষ্যমাত্রা টার্গেট ছাড়িয়ে গিয়েছে। এখন দিনে দেড় লাখেরও বেশি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে।
Advertisement



