দেশ ভাঙুক চাই না, গান্ধি ও নেতাজির মতো নেতা চাই : মমতা

কংগ্রেস-সিপিএম-বিজেপির ৱাজনৈতিক অবস্থানের ব্যাখ্যা দিয়ে নিজের রাজ্যের ধারাবাহিক উন্নয়নের খবর তুলে ধরে রবিবার বিকেলে বারুইপুর রাস মাঠে যাদবপুর লােকসভার দলীয় প্রার্থী মিমি চক্রবর্তীর সমর্থনে জনসভায় তৃণমূল সুপ্রিমাে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নরেন্দ্র মােদির কড়া সমালােচনা করলেন।

Written by SNS South 24 Parganas | May 13, 2019 2:35 pm

নির্বাচনী প্রচারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মিমি চক্রবর্তী (Photo: IANS)

কংগ্রেস-সিপিএম-বিজেপির ৱাজনৈতিক অবস্থানের ব্যাখ্যা দিয়ে নিজের রাজ্যের ধারাবাহিক উন্নয়নের খবর তুলে ধরে রবিবার বিকেলে বারুইপুর রাস মাঠে যাদবপুর লােকসভার দলীয় প্রার্থী মিমি চক্রবর্তীর সমর্থনে জনসভায় তৃণমূল সুপ্রিমাে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নরেন্দ্র মােদির কড়া সমালােচনা করলেন।

রোদ মাথায় নিয়ে জনতার উদ্দেশে মমতার বার্তা, ‘আমরা দেশ ভাঙুক চাই না। ভারতবর্ষথেকে ফ্যাসিস্ট সরকার সরতে হবে । ৪২-এ ৪২ চাই জোটের সরকার গড়তে হলে। আমরা এই দেশে গান্ধিজি, নেতাজির মতো নেতা চাই। গুন্ডা দাঙ্গাবাজ বিভেদকর্মীদের চাই না। ভারতবর্ষের কল্যাণই আমাদের সকলের কল্যাণ। জেনে রাখুন সকলে, এ রাজ্যে বামেরা ও কংগ্রেস একটাও সিট পাবে না। কেরলে ওরা কয়েকটা আসনে পেতে পারে। কাজেই সিপিএমকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে সাহায্য করা। ভােট কেউ নষ্ট করবেন না। জোড়া ফুলে ভােট দিন।’

এদিনই প্রথম দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রার্থীদের জন্য মমতা প্রচারে বেরোলেন। বাসন্তী-ক্যানিং হয়ে বারুইপুর। সন্ধ্যায় সভা সােনারপুরে। প্রার্থী মিমি চক্রবর্তীকে ভােট দিয়ে কেন জয়ী করবেন আর কেন মিমি প্রার্থী, তার ব্যাখ্যা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘এই যাদবপুর থেকেই প্রথম আমি সংসদে গিয়েছি। এরপর পরপর দু’বার দক্ষিণ কলকাতা থেকে। সমাজের সব অংশের মানুষ সংসদে যাক এটা তৃণমূল দলের ভাবনা। তাই এই দল থেকে সাংসদ হিসেবে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিল্পী, কাগজের সম্পাদক অভিনেতা অভিনেত্রী সকলকে পাঠানাে হয়েছে। আমার বিশ্বাস মিমিও পারব।’

মমতার বিশ্বাস, নরেন্দ্র মােদিকেও হারানাে যাবে। কারণ, দেশে কালো টাকা উদ্ধার হয়ে কী হল জনগণ জানল না। নোটবন্দি, নােট বাতিলে জনতা দুর্ভোগের শিকার। বেকারের সংখ্যা বেড়ে গেল। উল্টে হুমকি আর বিভাজনের কথা। শুধু মিথ্যে বলে যাওয়া। এই বারুইপুর রাসমাঠে দাড়িয়ে বলে যাচ্ছি, আমি মিথ্যে বললে কান ধরে ওঠবােস করব। উনি বললে উনি (মােদির নাম না করে) করবেন। বারুইপুরের সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী, বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান ব্যানার্জি, বিধায়ক নির্মল মন্ডল, আবু তাহের প্রমুখ।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, বিভিন্ন জায়গায় বলা হচ্ছে এখানে নাকি দুর্গাপুজো, সরস্বতী পুজো হয় না। ঘরে ঘরে সরস্বতী পুজো, লক্ষ্মীপুজো হয়। দুর্গাপুজো নিয়ে কার্নিভাল দেশবিদেশের মানুষ দেখছে। আমাদের সংস্কৃতিকে অপমান করা হচ্ছে। আমরা ওদের কাছে কিছু শিখব না। আমরা শিখেছি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বােসের কাছ থেকে ‘জয়হিন্দ’, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ‘বন্দেমাত্রম’ আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে জাতীয় সংগীত জনগণমন অধিনায়ক…।

মােদি শুধু রাজনৈতিকভাবে যা খুশি তাই বলছে না, সংবাদমাধ্যমের সামনে আসছে না। আবার তার বিরুদ্ধে কথা বললে সাংবাদিকের চাকরি যাবে। গৌরী লঙ্কেশের মতাে সাংবাদিককে খুন করে দিল। তাঁর বিরুদ্ধে আলােচনা হলেই টিভির চ্যানেল ঝিরঝিরে হয়ে যাবে। নিজের দলের সিনিয়র নেতাদেরও সম্মান দিচ্ছেন না। আদবানিজিকে এবার টিকিট দেওয়া হল না। অটলজি তাে নেই। আমি অটলজির মতাে নেতাদের শ্রদ্ধা করি। আবার বামদের মধ্যে ভালােমানুষ যারা আছ তাদের ভালােবাসি। বুদ্ধবাবুর (প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী) স্ট্যান্ড বুঝি। উনি বিজেপিকে পছন্দ করেন না। এই ভাবনা জেনে শ্রদ্ধা করি। অথচ এটাও ঠিক, ওনার আমলেই আমি বেশি মার খেয়েছি।

মার খেয়েছে মেদিনীপুরের ভােটে মানুষ। গুলি চলেছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে তিনি প্রয়ােজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেবেন। নির্বাচনী প্রচারে বেরােলেও ষষ্ঠ দফা ভােটে কোথায় কীভাবে হিংসা হচ্ছে তা নজরে রাখছেন। খবর নিচ্ছেন। আর এই সবকিছু হচ্ছে মােদির পার্টির নির্দেশে। সাত দফায় ভােট হওয়া মানেই তিনমাস সময় নষ্ট। সময়ে কাজ শেষ করতে বাধা পেতে হচ্ছে। তবে সব বাধা দূর হবে ৪২-এ ৪২ হলে।