নাড্ডা পড়েছেন গাড্ডায়, মন্তব্য অভিষেকের

জনসভায় যেতে গিয়ে নাড্ডার গাড়ি আক্রান্ত হওয়ার প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, ‘ওখানে গিয়ে গাড্ডায় পড়েছেন নাড্ডা ও দিলীপ ঘােষেরা। আমি কী করব?

Written by Debasish Seth Arambagh | December 11, 2020 3:00 am

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ছবি: SNS Web)

বরং দিলীপবাবুদেরও বলব, দুয়ারে সরকার প্রকল্পে বাঁধা না দিয়ে আপনারাও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়ে রাখুন, কারণ আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে তৃণমূলের ফিরে আসা শুধু সময়ের অপেক্ষা। তখন ছােটো বড়াে যত বিজেপি নেতা আছে সবারই মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে । তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব আর কেউ নেবে না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সেই দায়িত্ব নেবে।

বৃহস্পতিবার আরামবাগের প্রকাশ্য জনসভায় সর্বভারতীয় তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একমই শ্লেষাত্মক আক্রমণ ছুঁড়ে দেন বিজেপিকে উপলক্ষ করে। কর্মীদের মনােবল চাঙ্গা করতে তিনি তীব্র আক্রমণ শানান বিজেপির বিরুদ্ধে। তার বক্তব্য, “আগে ছিল সিপিএম- এর হার্মাদ, এখন বিজেপির জল্লাদ। যারা মনে করছে আরামবাগে অনিল বসুর সেই সন্ত্রাসের যুগ ফিরিয়ে আনবে তাদের বাড়া ভাতে ছাই দেওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। আমি সকলকে বলব, ঐক্যবদ্ধ থাকুন। উন্নয়নের বিজয় রথ রাজ্যের প্রান্তে প্রান্তে পৌছবে। সিপিএম, বিজেপির হার্মাদ, জল্লাদরা সব বাড়িতে বসে থাকবে। তৃণমুলের উন্নয়নের বিজয় রথ ছুটবে রাস্তায় রাস্তায়।

তৃণমূলের রিপাের্ট কার্ড সকলের সামনে তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার দশ বছরে যা যা করেছে তার বিবরণ এখানে দেওয়া আছে। আজ এই রিপাের্ট কার্ড প্রকাশিত হয়েছে। দেশের কোনও রাজ্যে এরকম কার্ড প্রকাশিত হয়নি। এই কার্ড সকলের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাবে। কিন্তু বিজেপির নেতাদের জিজ্ঞেস করুন, তােমাদের সাত বছরে রিপাের্ট কার্ড কোথায়? সাহস থাকলে তার হিসাব দিন। নির্বাচনের সময় উন্নয়নের গল্প শুনিয়েছিলে। কােথায় উন্নয়ন ?

নির্বাচন ছিল বলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছিল কিন্তু এখন চিন আমাদের ভুখণ্ড দখল করে বসে আছে, আর মােদি সরকার ললিপপ খাচ্ছে। আবার নির্বাচন আসছে। লড়াই হােক পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে। আমাদের নেত্রী দশ বছরে কী কী কাজ করেছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, সমস্ত ক্ষেত্রেই তার কী অবদান আর মােদির সরকার কী কী করেছে? রিপাের্ট কার্ড নিয়ে। আমরা সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে যাব। জনতা জনার্দন তারা ঠিক করবেন কে কাকে গ্রহণ করবেন আর কাকে বর্জন করবেন। এটাই গণতন্ত্র।

এই লড়াইয়ে বিজেপিকে যদি দশ শুন্য গােলে না হারাতে পারি তবে এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে কথা দিচ্ছি, আর রাজনীতির ময়দানে পা রাখব না।

এদিন জনসভায় যেতে গিয়ে নাড্ডার গাড়ি আক্রান্ত হওয়ার প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, ‘ওখানে গিয়ে গাড্ডায় পড়েছেন নাড্ডা ও দিলীপ ঘােষেরা। আমি কী করব? সাধারণ মানুষের ক্ষোভের প্রকাশ। আমফানের সময় আসেনি, মানুষের বিপদের সময় আসেনি এখন রাজনীতি করতে আসছে। তাই মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছে।

এদিনের সভায় হুগলি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দিলীপ যাদব, সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ অপরূপা পােদ্দার, বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা, বিধায়ক মানস মজুমদার থেকে শুরু করে হুগলি জেলার বহু তৃণমূল নেতা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য সম্প্রতি গােষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার হয়ে যাওয়া তৃণমূল দলের তথাকথিত বিক্ষুব্ধদেরও অধিকাংশেরই কিন্তু দেখা গেছে এই কর্মসূচিতে।

দিলীপ যাদব জানিয়েছিলেন পঞ্চাশ হাজারের মতাে জনসমাগম হওয়ার সম্ভানা আছে। সেই মতাে বুথে বুথে বাস, ট্রেকার পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও উল্লেখযােগ্যভাবে করা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রের খবর ১৮ টি সিসি টিভি , তিনটি জাইন্ট স্ক্রিন লাগানাে হয়েছিল এলাকা জুড়ে। আঁটোসাটো নিরাপত্তা বেষ্টনিতে ঘিরে রাখা হয়েছিল সারা এলাকা।

এই প্রসঙ্গে বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিমান ঘােষের মন্তব্য, ‘সভা সুপার ফ্লপ হয়েছে। আরামবাগ মহকুমার বাইরে থেকে লােক এনে মাঠ ভরানাের চেষ্টা হয়েছিল। মানুষকে ভয় দেখিয়ে, একশাে দিনের কাজের টোপ দিয়ে সভায় আনার চেষ্টা হয়েছে। তাও তিন হাজারের মতাে লােক হয়েছিল। ওই মাঠে লােক ধরবে সাত হাজার। বেশিরভাগ জায়গাই ফাকা । ছিল।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য, গতবার ব্যারাকপুরে উনি সকলের সামনে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন ওই আসনে যদি বিজেপি জেতে তাহলে উনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। কার্যত বিজেপি জিতেছে। কিন্তু উনি নির্লজ্জভাবে এখনও রাজনীতি করছেন। মানুষ আর ওনার কথা বিশ্বাস করে না। উনি মিথ্যাবাদী সবাই তাই জেনে গেছে।