দত্তপুকুর কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত জলিলকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। বারাসত থানার পুলিশ জম্মু থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। বুধবার ধৃতকে জম্মুর আদালতে তোলে পুলিশ। তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে পশ্চিমবঙ্গে আনা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে হজরত লস্কর নামে এক যুবকের মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার হয়েছিল দত্তপুকুরে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত মৃত যুবকের মাথার কোনও খোঁজ পায়নি পুলিশ। মনে করা হচ্ছে, জলিলকে জেরা করেই সেই বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাবে।
দেহ উদ্ধারের দিন অর্থাৎ ৩ ফেব্রুয়ারি জলিলকে বামনগাছি থেকে শিয়ালদহগামী ট্রেনে উঠতে দেখা গিয়েছিল। পুলিশ আধিকারিকরা অনুমান করেন, গা ঢাকা দিতে ট্রেনে করেই ভিন রাজ্যে পালিয়েছে জলিল। এরপর শিয়ালদহ-সহ বড় স্টেশনগুলির সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত কলকাতা স্টেশনের সিসিটিভি ফুটেজে জলিলের দেখা মেলে। এর আগে একাধিকবার জম্মু গিয়েছে জলিল। তাই পুলিশ সেই সূত্র ধরে তদন্ত চালাতে থাকে। আর পরবর্তীতে দেখা যায়, এবারও জম্মুই গিয়েছে জলিল। টানা তল্লাশির পর অবশেষে জম্মু থেকে জলিলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি দত্তপুকুর থানার ছোটো জাগুলিয়ার মালিয়াকুর বাজিতপুর এলাকার ফাঁকা জমির পাশ থেকে একটি মুন্ডুহীন দেহ উদ্ধার করা হয়। কৃষকরা প্রথম দেহটি দেখে পুলিশকে খবর দেন। দেহের পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানা যায়, মৃত যুবকের বয়স আনুমানিক ৪০ বছর। তাঁর গোটা শরীরে ক্ষতচিহ্ন ছিল। এমনকী যৌনাঙ্গও উপড়ে নেওয়া হয়েছিল। তাঁর হাত পা বাঁধা ছিল। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা মদের গ্লাস ও চিপসের প্যাকেট পাওয়া যায়। মৃতের বাম হাতে দু’টো উল্কি ছিল।
সেই উল্কির সূত্র ধরেই নিহতের পরিচয় পায় পুলিশ। পুলিশ জানায়, নিহত যুবকের নাম হজরত লস্কর। তিনি আদতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার লক্ষ্মীকান্তপুরের বাসিন্দা। গত বৃহস্পতিবার হজরতের পরিবারের লোকেরা বারাসত মেডিকেল কলেজের মর্গে এসে দেহ শনাক্ত করেন। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় জলিলের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। হজরতের দেহ চিহ্নিত হওয়ার পর তাঁর মামাতো ভাই ওবায়দুল গাজিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় গাজির স্ত্রী পূজা দাসকেও। পুলিশ সূত্রে দাবি ছিল, জলিলের স্ত্রী-র সঙ্গে নিহত হজরতের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। সেটা জানতে পেরে খুন করে জলিল।