রাজ্যে সপ্তাহে দু’দিন পুরো লকডাউন

লকডাউন (Representational Image: IANS)

দু’দিন আগে শনিবারই মুখ্যসচিব ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যে পুরো লকডাউন হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কনটেনমেন্ট জোন ছাড়া কোথাও লকডাউন করা হবে না। কিন্তু রবিবারই রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা একলাফে বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬। এই পরিস্থিতিতে সোমবার নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয় মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে।

এই বৈঠকের পরে স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, করোনা সংক্রমণ রুখতে এবার থেকে প্রতি সপ্তাহে দু’দিন করে পশ্চিমবঙ্গে পুরো লকডাউন হবে। এই দু’দিন সরকারি বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। কোনও পরিবহণ চলবে না। অত্যাবশকীয় পণ্যের দোকান এবং জরুরি পরিষেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ থাকবে।

স্বরাষ্ট্রসচিব ঘোষণা করেন, চলতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার এবং শনিবার পুরো রাজ্যে লকডাউন হবে। আগামী সপ্তাহে এরকম একটি দিন হল বুধবার। আর একটি দিন কবে, সেটা পরে ঘোষণা করা হবে। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, ডাক্তার এবং বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন বাংলায় কোথাও কোথাও গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে।


আমলা, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার পর মনে করা হচ্ছে করোনা শৃঙ্খল ভাঙতে এই লকডাউন অত্যন্ত জরুরি। সেই কারণেই সপ্তাহে দু’দিন করে এই লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। তবে কোন সপ্তাহে কবে লকডাউন হবে, সেটা আগে থেকে জানা যাবে না। পরিস্থিতি বিচার করে সপ্তাহের গোড়াতে পর্যালোচনা করার পর রাজ্য সরকার তা ঘোষণা করবে।

স্বরাষ্ট্রসচিবের এই ঘোষণার পর জনমানসে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। কেউ ভাবছে আগে থেকে জানা থাকলে সেইমতো কাজকর্ম সেরে নেওয়া যায়। যেদিন কাজ থাকবে, সেদিন সরকার লকডাউন ঘোষণা করে দিলে অসুবিধেয় পড়তে হবে আমজনতাকে।

উল্লেখ্য, দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে। বলে দাবি করেছে আইএমএ। কেরলেও যে গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে কিছুদিন আগেই সেকথা স্বীকার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। এই প্রেক্ষাপটে বাংলায় যেভাবে রোজই করোনা সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে, তা উদ্বেগজনক বলে মনে করছে প্রশাসন।

ইতিমধ্যেই ওড়িশা এবং উত্তরপ্রদেশে দু’দিন করে লকডাউন ঘোষণা করেছে যথাক্রমে নবীন পট্টনায়েক এবং যোগী আদিত্যনাথ সরকার। যদিও ওই দুটি রাজ্যেই শনিবার এবং রবিবার অর্থাৎ ছুটির দিনগুলিতে লকডাউন করা হচ্ছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে আপাতত সপ্তাহের কাজের দিনগুলিতেই লকডাউন করা হচ্ছে গোটা রাজ্যে। কনটেনমেন্ট জোনগুলিতে যেমন সপ্তাহের সাতদিনই পুরো লকডাউন চলছে তেমনি চলবে। এছাড়া সপ্তাহে দু’দিন করে গোটা রাজ্যে লকডাউন জারি থাকবে।

এদিন মুখ্যসচিব জানান, কোভিড ১৯-এর চিকিৎসা পরিষেবায় কোনও ঘাটতি নেই। বেড সংখ্যাও যথেষ্ট রয়েছে। তাই দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। রাজ্যে প্রায় ৮৭ শতংশ কোভিড রোগি উপসর্গহীন। তাদেরকে হোম আইসোলেশনে অথবা সেফ হাউসে রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

এদিন করোনা চিকিৎসার জন্য ইন্টিগ্রেটেড হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হল নবান্ন থেকে। স্বাস্থ্য ভবনে জরুরি যোগাযোগের নম্বর ১৮০০৩১৩৪৪৪২২২ এবং ০৩৩২৩৪১২৬০০। টেলি মেডিসিনের জন্য যোগাযোগের নম্বর ০৩৩২৩৫৭৬০০১। অ্যাম্বুলেন্সের নম্বর ০৩৩৪০৯০২৯২৯।