ভােট কিনতে জড়িতদের হাতেনাতে ধরিয়ে দিতে পারলেই চাকরি: মমতা

বাঁকুড়ার ইন্দার জনসভায় মমতার বিস্ফোরক অভিযােগ, ভােট কিনতে রাতের অন্ধকারে টাকা বিলি হচ্ছে।

Written by SNS Kolkata | March 25, 2021 9:11 am

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (Photo: IANS)

গত লােকসভা নির্বাচন থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভােট কেনার অভিযােগ জানিয়ে আসছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমাে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ও পুরুলিয়ার জনসভা থেকেই নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন, রাজ্যগুলির সীমান্ত সিল করার জন্য। কারণ, ভিনরাজ্য থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের স্টিকার লাগানাে গাড়িতে টাকা আসছে।

বুধবার আর কমিশনের ওপর ভরসা রাখতে পারলেন না মমতা। এদিন বাঁকুড়ার ইন্দার জনসভায় মমতার বিস্ফোরক অভিযােগ, ভােট কিনতে রাতের অন্ধকারে টাকা বিলি হচ্ছে। এদিন মমতা প্রকাশ্য সভায় প্রতিশ্রুতি দেন, টাকা বিলিতে জড়িতদের হাতেনাতে ধরিয়ে পারলেই সরকারি চাকরি দেওয়া হবে।

তৃণমূল সুপ্রিমাের এহেন ঘােষণায় নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযােগ করলেন বিরােধীরা। এইভাবে নেত্রী টাকার প্রলােভন দেখিয়ে ভােটারদের প্রভাবিত করছেন বলে মনে করছেন বিরােধী রাজনৈতিক দলগুলি। বামফ্রন্টের পক্ষে সুজন চক্রবর্তী বলেন, টাকা বিক্রির সঙ্গে কে বা কারা জড়িত, তা প্রকাশ্যে আনা দরকার। কিন্তু তার জন্য চাকরির প্রতিশ্রুতি মুখ্যমন্ত্রী দিতে পারেন না। এইভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে হাস্যকর জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন সুজন চক্রবর্তী।

অন্য দিকে টাকা বিলির অভিযােগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে তৃণমূল সুপ্রিমাের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেন বিজেপির নেতারা। বুধবার বাঁকুড়ায় তিনটি সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে এদিন কাথিতে নির্বাচনী সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি মমতার বহিরাগত’র তত্ত্বকে খারিজ করে দিয়ে বলেন, আমরা কেউই বহিরাগত নয়, সকলেই ভারতবাসী।

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরেও ফের বিপুরের সভা থেকে ‘বহিরাগত’ ইস্যুকে সামনে এনে মমতা বুঝিয়ে দিলেন নিজের বক্তব্যে অনড় তিনি। মমতা ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, যাঁরা বাংলার বাসিন্দা নয়, তারাই বহিরাগত। তার মতে, এই রাজ্যে যাঁরা বাস করেন, তারা গুজরাতি, রাজস্থানি, পাঞ্জাবি, বিহারী, দক্ষিণ ভারতীয়, ওড়িয়া — যেই হােন না কেন, তাদের কাউকে আমরা বহিরাগত বলি না। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ থেকে যাদের গেরুয়া পােশাক পরিয়ে পাঠানাে হয়েছে, তারা অবশ্যই বহিরাগত। রাজ্যে ভােটের সময় গুণ্ডাগিরি করার জন্যই এদের রাজ্যে পাঠানাে হচ্ছে।

বুধবার বিষ্ণুপুরের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদিকে ‘মিথ্যেবাদী’ বলে আক্রমণ করেন মমতা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারকে আমি সম্মান করি। কিন্তু একজন প্রধানমন্ত্রী কীভাবে এত মিথ্যে কথা বলতে পারেন। মমতার বক্তব্য, তিনি গােটা দেশকে বেচে দিচ্ছেন। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাগুলিকে বাঁচিয়ে রাখতে পারছেন না। অথচ বাংলায় এসে নানান প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। বুধবার বাঁকুড়ার সভা থেকে বিজেপিকে চোরেদের দল বলে কটাক্ষ করেন মমতা। গ্যাস, পেট্রোল, ডিজেলের লাগামছাড়া দাম বাড়ানাে নিয়েও বিজেপির নীতির সমালােচনা করেন।