আরজিকর কাণ্ডের প্রতিবাদে শনিবার নবান্ন অভিযানে স্থগিতাদেশ দিচ্ছে না কলকাতা হাইকোর্ট। বরং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে মৌলিক অধিকার বলে মন্তব্য করেছে আদালত। কার্যত মামলাকারীর আবেদন খারিজ করে দিয়ে উচ্চ আদালত জানিয়েছে, ‘এমন ধরনের প্রতিবাদের উপর কোনও সাধারণ নিষেধাজ্ঞামূলক নির্দেশ দেওয়ার মতো পরিস্থিতি এখানে নেই।’
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘এটা স্পষ্ট করতে চাই যে, যাঁরা প্রতিবাদে যোগ দেবেন, তাঁরা যেন আইন মেনে শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করেন। পুলিশ, সরকারি কর্মী, সরকারি ভবন বা সম্পত্তির কোনও ক্ষতি না করেন। ভারতীয় সংবিধানেও বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য হল সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করা এবং হিংসা না করা।’
Advertisement
এদিনের শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী সওয়াল করেন, ‘নবান্ন সংলগ্ন এলাকায় অনেক প্রতিষ্ঠান এবং দোকান রয়েছে। আমার মক্কেলও হাওড়ার একজন ব্যবসায়ী। এই ধরনের কর্মসূচিতে অতীতে ব্যাপক গন্ডগোলের উদাহরণ রয়েছে। এ বারও তেমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার দায় কর্মসূচির উদ্যোক্তারা নেবেন না। এই সব কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।’
Advertisement
অন্যদিকে, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলও এই অভিযানে অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা করছেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি গত বারের নবান্ন অভিযানে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তা তুলে ধরেন। তাঁর বক্তব্য, ‘গত বার ৪৭ জন পুলিশ কর্মী আহত হন। এক জন পুলিশের চোখ নষ্ট হয়ে যায়। ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১৪০ জনের বেশি লোককে গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা হিংসার পুনরাবৃত্তি চাই না। রাজ্য ইতিমধ্যে প্রতিবাদের জন্য একটি নির্দেশিকা জারি করেছে। যে কেউ যেখানে খুশি প্রতিবাদ কর্মসূচি করতে পারেন না।’
প্রসঙ্গত, ৯ আগস্ট শনিবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন আরজি কর-কাণ্ডে নিহত মহিলা চিকিৎসকের বাবা-মা। সেই অভিযানের বিরোধিতা করে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের আবেদন জানিয়েছিলেন এক মামলাকারী। বৃহস্পতিবার দায়ের হওয়া সেই জনস্বার্থ মামলার শুনানি হয়। শুনানিতে কেন তারা নবান্ন অভিযানের বিরোধিতা করছে, তার পক্ষে মামলাকারী এবং রাজ্য সরকার, দুই পক্ষই যুক্তি সহকারে তাঁদের বক্তব্য পেশ করে। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর হাই কোর্ট জানায়, আদালত শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে বাধা দিতে পারে না।
Advertisement



