মালদহের বৈষ্ণবনগরে গিয়ে মুর্শিদাবাদের হিংসায় ঘরছাড়া পরিবারগুলির সঙ্গে শুক্রবার দেখা করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এ দিন সকালেই ট্রেনে চেপে তিনি মালদহের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। মালদহ স্টেশনে নেমে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন তিনি। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, এখনই মুর্শিদাবাদে যাচ্ছেন না। ঘরছাড়াদের সঙ্গে দেখা করতে শিবিরে যাচ্ছেন। তারপর সড়কপথে বৈষ্ণবনগরের পারলালপুর স্কুলের আশ্রয় শিবিরে যান রাজ্যপাল। সেখানে দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
গত সপ্তাহে সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মুর্শিদাবাদের একাধিক এলাকা। এই ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। আক্রান্ত বহু মানুষ। পরিস্থিতি বিবেচনা করে এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। অশান্তির আবহে নিজেদের বাড়ি ঘর ছেড়ে মালদহের বৈষ্ণবনগরের পারলালপুর হাইস্কুলের ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন অনেক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। বৃহস্পতিবারই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা হয়েছে সিভি আনন্দ বোসের। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেই মালদহের শিবিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রাজ্যপাল।
শুক্রবার সকালে কলকাতায় পৌঁছেছেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপারসন বিজয়া রাহাতকর। তারপর মালদহে গিয়ে আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। মালদহের জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ও অন্যান্য জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছেন তাঁর। বিকেলে বিজয়া সহ মহিলা কমিশনের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল শমসেরগঞ্জ থানার ধুলিয়ানের জাফরাবাদে নিহত হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন।
পাশাপাশি তাঁদের মালদহের আশ্রয় শিবিরেও যাওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়াও, বেতবোনা, দাসপাড়া, জাফরাবাদ, ঘোষপাড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলবেন তাঁরা। বিজয়া রাহাতকর জানিয়েছেন, আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলে দিল্লিতে দ্রুত রিপোর্ট পাঠানো হবে। শুক্রবার দুপুরে পারলালপুর হাইস্কুলে আশ্রয় শিবিরে গিয়েছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরাও। সেখানে তাঁরা ঘরছাড়া কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন।
রাজ্যপাল মুর্শিদাবাদে যেতে পারেন বলে শুক্রবার সকাল থেকে জল্পনা ছড়িয়েছিল। সকাল থেকেই জেলায় নিরাপত্তা নিয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে দেখা যায় প্রশাসনকে। ধুলিয়ানের হিংসা কবলিত এলাকায় মোতায়েন করা হয় বাড়তি কেন্দ্রীয় বাহিনী। টহল দিচ্ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাড়ি। ধুলিয়ান ও সুতির কয়েকটি এলাকায় সকাল থেকে পরিদর্শন করে রাজ্য পুলিশের বিশেষ দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা।