আগামী এক বছর রাজ্যে বিনামূল্যে রেশন

নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের ১০ কোটি মানুষের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা, আগামী জুন মাস পর্যন্ত বাড়িয়ে দিলাম ফ্রি’তে রেশন দেওয়া।

Written by SNS Kolkata | July 1, 2020 1:03 pm

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (File Photo: IANS)

রাজায় রাজায় যুদ্ধ হলে কখনও কখনও উলুখাগড়াদের প্রাণ তো যায়ই না, বরং তারা আরও প্রাণ পায়। মঙ্গলবার ফ্রি’তে রেশন নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে নজিরবিহীন প্রতিযোগিতায় প্রমাণিত হল সেই সত্য। লাভবান হল আমজনতাই।

মঙ্গলবার আনলক ওয়ানের শেষদিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করলেন, আগামী নভেম্বর পর্যন্ত দেশের ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হবে। সেই ঘোষণার পনেরো মিনিট পরেই নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের ১০ কোটি মানুষের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা ঘোষণা, ওরা নভেম্বর পর্যন্ত দিচ্ছে। ঠিক আছে আমি আরও এক বছর অর্থাৎ আগামী জুন মাস পর্যন্ত বাড়িয়ে দিলাম ফ্রি’তে রেশন দেওয়া।

শুধু তাই নয় এদিন মমতা দাবি করেছেন, ওদের চাল এফসিআই থেকে আসে। ওদের চালের কোয়ালিটি খারাপ। আমাদের কোয়ালিটি ভালো। আমরা সরাসরি রাজ্যের কৃষকদের কাছ থেকে চাল কিনি। এবার থেকে আটাও দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া কেন্দ্র সবাইকে রেশন দেয় না। যা রেশন দেয় তাতে বাংলার ৬০ শতাংশ মানুষ পায়, ৪০ শতাংশ মানুষ পায় না। ওরা সবাইকে রেশন দেয় না। এটা ঠিক না। আমি চাই কেন্দ্র সবাইকে ফ্রি’তে রেশন দিক।

অর্থাৎ কেন্দ্রের রেশন ব্যবস্থার কোয়ালিটি এবং কোয়ানটিটি সব দিয়েই মঙ্গলবার মোদি সরকারের সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশের বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে আগামী বছর জুন মাস পর্যন্ত ফ্রি’তে রেশন দিয়ে কেন্দ্রকে মমতা কিস্তি দিতে চাইলেন বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।

এদিকে রাজ্য বিজেপির নেতাদের দাবি, মমতা ফ্রি’তে রেশন দেবে কোথা থেকে? রেশনের চাল বা গমের পুরো ভর্তুকিই দেয় কেন্দ্র। প্রতি কেজি চালেই কেন্দ্র ভর্তুকি দেয় তিরিশ টাকার মতো। বামফ্রন্টের পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীও বলেছে, জুন পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন কিনা, উনি (মমতা) নিজেও জানেন না। লকডাউনের সময় গরিব মানুষের খাওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রনেতাকেই নিতে হয়, এটাই আইন। এটা নিয়ে লড়াই করা ঠিক নয়।

প্রসঙ্গত এদিন নরেন্দ্র মোদি আগামী পাঁচ মাস মাথা পিছু পাঁচ কেজি করে চাল বা গম দেওয়ার সঙ্গে পরিবার পিছু এক কেজি করে ছোলাও বিনামূল্যে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। এই অতিমারীর পরিস্থিতিই এক দেশ এক রেশন কার্ড চালু করতে চায় কেন্দ্র।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন অবশ্য এক দেশ এক রেশন কার্ড নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বলেছেন বিষয়টা ভালো করে না জেনে কোনও মন্তব্য করব না। তবে ফ্রি’তে রেশন নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে দ্বৈরথে শেষ পর্যন্ত ঝুলি ভরল আমজনতারই।