আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ সম্প্রতি সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন আর্থিক দুর্নীতির মামলায়। তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় অনুমতি ছাড়াই একাধিক সম্পত্তি কেনার অভিযোগ উঠেছে। ইডি সম্প্রতি তাঁদের সম্পত্তির নথি বাজেয়াপ্ত করার পর থেকেই এই বিষয়টি আলোচনায় উঠে এসেছে।
ইডির দাবি, সন্দীপ এবং সঙ্গীতা ঘোষের নামে বেআইনি সম্পত্তির বিভিন্ন নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ইডি একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, মুর্শিদাবাদে একটি ফ্ল্যাট, কলকাতায় তিনটি ফ্ল্যাট, দুটি বাড়ি এবং একটি খামারবাড়িতে অভিযান চালিয়ে নথিগুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
Advertisement
সন্দীপ এবং তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে বিভিন্ন ডিজিটাল নথিও উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থার মতে, বেআইনি অর্থ লেনদেন প্রতিরোধ আইন, ২০২২ (পিএমএলএ) অনুযায়ী এই নথিগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ইডি জানিয়েছে, মোট সাতটি ঠিকানায় তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। সন্দীপ এবং তাঁর চিকিৎসক-স্ত্রী সঙ্গীতা, যথাযথ অনুমতি ছাড়াই একাধিক স্থাবর সম্পত্তি কেনার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন।
Advertisement
এছাড়া, সন্দীপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তির বাড়িতেও ইডি তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতার দুটি স্থানে অভিযান চালানো হয়। টালা এলাকার একটি বহুতল ভবনের পাঁচ তলায় ব্যবসায়ী চন্দন লৌহের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়, যিনি সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া, কালিন্দীতে অক্টেন মেডিক্যাল নামে একটি চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহকারী সংস্থার অফিসেও তল্লাশি চালানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগগুলো সামনে আসে যখন গত ৮ আগস্ট কর্মরত চিকিৎসক তরুণীর মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর আরজি কর হাসপাতলের অন্দরের নানা আর্থিক বেনিয়মের তথ্য সামনে আসে। এই ঘটনার তদন্তের স্বার্থে রাজ্য সরকারের তরফে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয় ১৬ অগস্ট। তবে পরের দিনই কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর, ইডি বেআইনি আর্থিক লেনদেনের তদন্ত শুরু করে।
তদন্তের সূত্র ধরে, সন্দীপের বিভিন্ন স্থাবর সম্পত্তিতে হানা দেওয়া হয়, যার মধ্যে রয়েছে কলকাতা, বহরমপুরের গোরাবাজার এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে একটি বাংলো। ক্যানিং-২ ব্লকের নারায়ণপুর মৌজায় সন্দীপ ঘোষের ‘সঙ্গীতাসন্দীপ ভিলা’ নামে একটি বিশাল বাংলোও তল্লাশির আওতায় এসেছে।
এদিকে, সন্দীপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সুপার পদে থাকাকালীন ২০২০ সালে তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল, যার মধ্যে আর্থিক দুর্নীতি, হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কেনায় অনৈতিক লেনদেন, অনুমতি ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ এবং ঘুষের মাধ্যমে বাড়ি তৈরির অভিযোগ উল্লেখযোগ্য।
Advertisement



