দুর্গা পুজো’র নির্দেশিকা প্রকাশ রাজ্য সরকারের

এতদিন পর্যন্ত দুর্গা পুজো হত শাস্ত্রীয় বিধান মেনে। কিন্তু অতিমারী আবহে এবার দুর্গা পুজো মানতে হবে করােনা বিধিও।

Written by Supratik September 29, 2020 12:00 pm

প্রতিকি ছবি (File Photo: iStock)

এতদিন পর্যন্ত দুর্গা পুজো হত শাস্ত্রীয় বিধান মেনে। কিন্তু অতিমারী আবহে এবার দুর্গা পুজো মানতে হবে করােনা বিধিও। আর তাই এবারের করােনা আবহে দুর্গা পুজোর আচার বিচারের সঙ্গে সঙ্গে এবার মেনে চলতে সরকারের বেঁধে দেওয়া একাধিক নিয়ম নীতি। 

গত বৃহস্পতিবারই নেতাজি ইন্ডাের স্টেডিয়ামে পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে এবারে দুর্গা পুজো কীভাবে হবে, তার রূপরেখা প্রকাশ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সােমবার রাজ্য সরকার প্রকাশ করল উৎসব পালনের একগুচ্ছ নির্দেশিকা। 

এবারে দুর্গা পুজোর প্যান্ডেলের মূল থিমই হয়ে দাঁড়িয়েছে খােলামেলা প্যান্ডেল। যথাসম্ভব বড় প্যান্ডেল করতে হবে। প্যান্ডেলে ঢোকা-বেরনাের পথ আলাদা রাখতে হবে। প্যান্ডেলের ভেতরে এমনভাবে জায়গা রাখতে হবে, যাতে দর্শকরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারে। প্রয়ােজনে মেঝেতে গােল দাগ দিয়ে রাখতে হবে। যাতে কোনও সমস্যা না হয়। প্যান্ডেল অবশ্যই খােলামেলা হবে। যাতে যথেষ্ট পরিমাণে হাওয়া চলাচল করে। 

যদি প্যান্ডেলের সিলিং ঢাকতে হয়ে, চারপাশ খােলা রাখতে হবে। আর চারপাশ খােলা রাখলে মাথার ওপরে ঢাকা দেওয়া যাবে না। প্রত্যেক দর্শনার্থীকে অবশ্যই মাস্ক পরে প্যান্ডেলে আসতে হবে। যদি কেউ মাস্ক না পরে

আসেন, তাহলে পুজো কর্তৃপক্ষ তাদের মাস্ক দেওয়ার বন্দোবস্ত রাখবে। দর্শনার্থীদের হাতে দেওয়ার জন্য মজুত রাখতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। 

এছাড়া সময়ান্তরে প্যান্ডেল এবং আশেপাশের এলাকা স্যানিটাইজ করতে হবে। মণ্ডপে যথেষ্ট সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী রাখতে হবে। তাদের মাস্ক, স্যানিটাইজার, ফেস শিল্ড দিতে হবে পুজোর উদ্যোক্তাদের। ভিড় হলে বা কেউ নিয়ম ভাঙলে স্বেচ্ছাসেবীরা তা দেখভাল করবেন। 

অঞ্জলি দেওয়া, প্রসাদ বিতরণ, সিঁদুর খেলা এসব অনুষ্ঠান পকিল্পিতভাবে করতে হবে, কোনও ভিড় না বাড়িয়ে। প্রয়ােজনে ছােট ছােট দলে ভাগ করে এসব অনুষ্ঠান করতে হবে। অঞ্জলির ফুল বাড়ি থেকে আনতে হবে, যাতে ফুল হাতে নেওয়ার জন্য প্যান্ডেলের ভেতর ভিড় না হয়। পুরােহিতের মন্ত্র মাইক্রোফোনের মাধ্যমে অনেকদূর পর্যন্ত শুনতে পাওয়া আবশ্যিক। 

পুজোমণ্ডপের আশেপাশে কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হবে না। শারদ সম্মান দেওয়ার ক্ষেত্রে সেরা পুজো বাছাইয়ের জন্য বিচারকদের বড় টিম পুজো প্যান্ডেলে এসে ভিড় করতে পারবে না। বড়জোর বিচারকদের দুটো গাড়ি প্যান্ডেলে প্রবেশ করতে পারবে, বেলা দশটা থেকে দুপুর তিনটে পর্যন্ত। বেশিরভাগ খুঁটিয়ে দেখার কাজ ভার্চুয়ালি করতে হবে।

নিজেদের পুজোর প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে করােনা আবহে পুজোর নিয়ম নীতিরও প্রচার চালাতে হবে পুজো কমিটিগুলিকে। এজন্য সােশ্যল মিডিয়া, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াকে ব্যবহার করতে হবে। পুজোর বােধন থেকে বিসর্জন দুইই করতে হবে ন্যূনতম লােকজন নিয়ে। উদ্বোধন ভাচুয়ালি করতে পারলেই ভালাে। বিসর্জনের জন্য কোন ঘাটে, কখন কোন পুজোর বিসর্জন হবে, তার আগাম পরিকল্পনা করে রাখতে হবে পুজোর উদ্যোক্তাদের প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করে। 

এবছর রাজ্য সরকার আয়ােজিত পুজোর কার্নিভাল হবে না। পুজো এবং তৎসংলগ্ন অনুমােদনের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে। ভিড় এড়ানাের জন্য বেশিদিন খােলা রাখতে হবে প্যান্ডেল। এই কারণে তৃতীয়া থেকেই পুজোর উদ্বোধন হতে পারে। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমস্ত নীতি নির্দেশ মেনে চলতে হবে পুজো কমিটিগুলিকে, এমনকী দর্শনার্থীদেরও। 

অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার জন্য কোনও সংস্থা কোনও টাকা নিতে পারবে না। বিদ্যুতের খরচ পঞ্চাশ শতাংশ কম করতে হবে। কোভিড বিধি মেনে চলার জন্য রাজ্য সরকার যে পুজো কমিটিগুলিকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেবে। এবারের দুর্গা পুজোয় প্রশাসন সতর্ক থাকবে ভিড় সামলানাের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কাজে সহযােগিতা করবে।