অনড় অবস্থানে ডাক্তাররা, অসহায় অবস্থায় রােগীরা

রাজায় রাজায় যুদ্ধ হলে প্রাণ যায় উলুখাগড়াদেরই। বুধবার থেকে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে যখন ডাক্তার বনাম প্রশাসনের মধ্যে লড়াই চলছে, তখন প্রাণ বিপন্ন হচ্ছে একের পর এক অসহায় রােগীদের।

চোখে গুরুতর আঘাত নিয়ে এগারাে বছরের অনুভবকে নিয়ে হাসনাবাদ থেকে আরজিকর-এ ছুটে এসেছিলেন মা সুনীতা দেবী। গুলতি থেকে ছোড়া ইটের টুকরােয় অনুভবের চোখ অন্ধ হওয়ার উপক্রম। কিন্তু ডাক্তার নার্সদের হাতে পায়ে ধরেও ছেলেকে ভর্তি করাতে পারেননি মা।

জন্মের পর থেকে সাতচল্লিশ দিন আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন নুর নবি। ছুটি পাওয়ার পরেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে এসেছিলেন ফের ভর্তি হতে। কিন্তু তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বলা হয় আন্দোলন চলছে, অন্যত্র দেখুন।


পা ভেঙে আট দিন ধরে আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি ছেলে জয়দেব সাহা। তার মা সন্ধ্যাদেবী জানেন না কবে হবে তার অস্ত্রোপচার। প্রায় একই অবস্থা এসএসকেএম হাসপাতালে।

বর্ধমান মেডিকেল কলেজে আন্দোলন চলছে। তাই ক্যান্সার আক্রান্ত ধীরেন কর্মকারকে কেমাে থেরাপির জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল এসএসকেএম হাসপাতালে। কিন্তু এখানেও আন্দোলনের জেরে কেমাে না দিয়েই ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে।

মুর্শিদাবাদ থেকে এসএসকেএম-এ আসা পীতাম্বরও কেমাে না নিয়ে ফিরে গিয়েছেন নিজের বাড়িতে। সারা রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে এইভাবে চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বহু মানুষ। প্রাণ হারানাের মতাে ঘটনাও ঘটে যাচ্ছে। কিন্তু তার পরেও লড়াই চলছে চলবে মনােভাবই চলছে সরকার ডাক্তারদের মধ্যে। এরই মধ্যে জীবনযুদ্ধে হেরে যেতে হচ্ছে অসহায় রােগী ও তাদের পরিজনদের।