ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘা যাওয়ার পথে দিঘা উন্নয়ন পর্ষদের হাতে থাকা প্রায় ২৩ একর জমির উপরে আড়াইশো কোটি টাকা খরচ করে জগন্নাথধাম সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। আজ এর দ্বারোদ্ঘাটন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্দির নির্মাণের দায়িত্বে ছিল হিডকো। মন্দিরটি রাজস্থানের গোলাপি বেলেপাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। নির্মাণকাজ করেছেন অন্তত ৮০০ জন দক্ষ কারিগর। রাজস্থান থেকেই তাঁদের নিয়ে আসা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে অনেকেই অযোধ্যার রামমন্দির নির্মাণকাজেও অংশ নিয়েছিলেন। ২০১৯ সালে এই মন্দির তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০২২ সালের মে মাসে নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। এই মন্দির পরিচালনার জন্য রয়েছে একটি ট্রাস্টি বোর্ড।
পুরীর মন্দিরের আদলে সম্পূরা ঘরানায় দিঘার জগন্নাথধাম তৈরি করা হয়েছে। রীতি মেনে মন্দিরে নির্মাণ করা হয়েছে অশ্বদ্বার, ব্যাঘ্রদ্বার, হস্তিদ্বার ও সিংহদ্বার। পৌরাণিক রীতি মেনে কালো রঙের পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ১৮ মুখী অরুণ স্তম্ভ। স্তম্ভটি ৩৪ ফুট লম্বা। তার মাথায় রয়েছে অরুণা মূর্তি। অরুণ স্তম্ভের সামনের সিংহদ্বার দিয়ে ঢুকলেই সোজাসুজি জগন্নাথের মূর্তি দেখতে পাবেন দর্শনার্থীরা। পূর্ব দিকের এই সিংহদ্বারই মন্দিরের প্রধান প্রবেশদ্বার। এর ঠিক বিপরীতে রয়েছে ব্যাঘ্রদ্বার। উত্তরে রয়েছে হস্তিদ্বার ও দক্ষিণে অশ্বদ্বার। জগন্নাথদেবের ভোগ রান্নার জন্য থাকছে আলাদা ভোগশালা।
মূল মন্দিরে চারটি অংশ আছে। ভোগমণ্ডপ, নাটমন্দির, জগমোহন ও গর্ভগৃহ। ভোগমণ্ডপে রয়েছে চারটি দরজা। অপরদিকে ১৬টি স্তম্ভের উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে নাটমন্দির। নাটমন্দিরের দেওয়ালে দেখা যাবে কালো পাথরের ছোটো ছোটো দশাবতার মূর্তি। ভোগমণ্ডপ ও নাটমন্দিরের মাঝে রয়েছে গরুড় স্তম্ভ। চারটি স্তম্ভের উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে জগমোহন। জগমোহনের পরে রয়েছে মূল মন্দির বা গর্ভগৃহ। এই গর্ভগৃহেই থাকবেন পাথরের তৈরি জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি। তবে নিমকাঠের তৈরি মূর্তিতে পুজো করা হবে। পুরীর মতো দিঘার মন্দিরেও লক্ষ্মী মন্দির রয়েছে।
পুরীর মন্দিরের মতো দিঘাতেও প্রতিদিন নিয়ম মেনে মন্দিরের ধ্বজা পরিবর্তন করা হবে। সেই কাজের জন্য পুরীর মন্দির থেকে দক্ষ সেবায়েতদের আনা হয়েছে। আজ অক্ষয় তৃতীয়ার দিন এই মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই সমস্ত প্রস্তুতির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। জগন্নাথদেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠার পর দুপুর ৩টা নাগাদ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করবেন মমতা।