পরিযায়ী শ্রমিকদের পরে এবার করোনার ভয়ে শহর থেকে নিজভূমে ফিরতে চাইছেন ভিনজেলা থেকে আসা বাসচালক ও কন্ডাক্টররা। এই শহরের বেশিরভাগ পথঘাটই তাদের অজানা হওয়ায় তারা এখানে বাস চালাতে স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন না।
অন্যদিকে এই মহানগরের সরকারি আপনায় থাকা খাওয়ার স্বাচ্ছন্দ্য মিলছে না তাদের। সব মিলিয়ে তারা ছাড়তে চাইছেন এই অজানা শহরটা। করোনাভাইরাসের প্রকোপের মাঝেই আনলক ১ পর্যায়ে যাত্রীদের সুবিধের জন্য দক্ষিণবঙ্গ ভূতল পরিবহণ (এসবিএসটিসি) থেকে ২০০টি এবং উত্তরবঙ্গ ভূতল পরিবহণ (এনবিএসটিসি) থেকে ১২০টি বাস শহর কলকাতায় নিয়ে এসেছে রাজ্য সরকার।
Advertisement
এই সমস্ত বাসের কর্মীরা ছাড়াও আলিপুরদুয়ার, শিলিগুড়ি, বাঁকুড়া, বীরভূম থেকেও ২৬০ জন বাসচালক এবং কন্ডাক্টরকে শহর কলকাতায় ডিউটি করার জন্য আনা হয়েছে। সল্টলেক স্টেডিয়ামের ডরমেটরিতে এঁদের রাখা হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি এসবিএসটিসি’র দুই চালকের দেহে ধরা পড়েছে করোনাভাইরাস। ফলে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এই সমস্ত ভিনজেলার ড্রাইভার কন্ডাক্টরের মধ্যে।
Advertisement
এছাড়া বাসস্থানের অসুবিধে এবং খাবারের নিম্নমান নিয়েও অভিযোগ রয়েছে তাদের। কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়গুলি নিয়ে বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও কোনও সুরাহা না হওয়ায় তিন সরকারি আধিকারিককে ঘেরাও করে ভিজেলার বাসিন্দা এই বাসকর্মীরা। পরে প্রতিবাদকারীদের হাত থেকে সরকারি আধিকারিকদের উদ্ধার করে পুলিশ।
এসবিএসটিসি বাসের এক পরিবহণকর্মী বলেন, এখন এমন একটা সময়, যখন প্রতিটা মুহূর্ত কাটছে আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে। আমাদের যদি করোনা পরীক্ষা না করা হয়, তাহলে বাড়ি ফিরতেও ভরসা পাচ্ছি না। এসবিএসটিসি’র এক বাসচালক বলেন, আমি আমার লাইফটাইমে কলকাতায় এসেছি বড়জোর পাঁচ থেকে ছ’বার। আমাকে একদিন সকালে বলা হল একটা নির্দিষ্ট রুটে বাস চালাতে। আমার কাছে সেটা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। আমার কাছে কোনটা শ্যামবাজার আর কোনটা শ্যামনগর তা গুলিয়ে দেওয়ার মতো ব্যাপার। তাছাড়া ডিউটি আওয়ার্সের কোনও ঠিকঠিকানা নেই। এইরকম অনেক প্রতিকুলতা নিয়ে কাজ করে চলেছি।
এদিকে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এবং করোনায় দূরত্ববিধি মেনে যত আসন, তত চালক এই নীতিতে বেসরকারি বাস প্রাথমকিভাবে রাস্তায় না নামলেও, শুক্রবার থেকে ধীরে ধীরে স্বাভাবির হচ্ছে বেসরকারি বাস পরিষেবা। তবে আন্তজেলা বাস পরিষেবা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। জেলার পরিবহণকর্মীদের এখন শহরের রাস্তায় বাস চালানোর কাজে লাগানো হয়েছে। তবে এইসব ভিনজেলার বাসকর্মীরা এখন দিন গুণছেন পরিযায়ী শ্রমিকদের মতো কবে তারা নিজভূমে ফিরতে পারবেন।
Advertisement



