এর আগেও একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। এ বার ভিনরাজ্যে বাংলায় কথা বললেই হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ওড়িশা, বিহার, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশে বাংলাভাষী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে। বাংলায় কথা বলা কোনও দোষের কি না সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকারের উদ্দেশেও হুঁশিয়ারির সুর শোনা গিয়েছে মমতার গলায়। সেই সকল রাজ্যের সরকারের সঙ্গে কথা বলার জন্য স্বরাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে ওড়িশার ডিজির সঙ্গে ইতিমধ্যেই রাজ্যের ডিজি কথা বলেছেন। সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির উদ্দেশে মমতা বক্তব্য, ‘এ সব বন্ধ করুন।’
সোমবার মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, ‘ওড়িশা সহ বিভিন্ন জেলায় কাজ করতে গিয়ে বাংলায় কথা বললে তাঁদের মারা হয়েছে। এটা কেন হবে? বাংলায় কথা বলা কি দোষের?’ এরপরই সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির উদ্দেশে এ সব কাজ বন্ধ করার বার্তা দিয়েছেন মমতা। তিনি জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গেও দেড় কোটি পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করেন। তাঁরা বিভিন্ন রাজ্যের, বিভিন্ন ধর্মের। সেই সকল মানুষের উপরে কিন্তু অত্যাচার হয় না। তাহলে বাংলার মানুষ ভিন রাজ্যে গেলে তাঁদের উপরে অত্যাচার কেন হয় সেই প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, এটাই পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির ফারাক।
মমতা আরও বলেছেন, ‘কারও হাতে হিংসার তাস তুলে দেবেন না। আমরা আপনাদের রাজ্যের শ্রমিকদের সুরক্ষিত রাখব। কিন্তু কোথাও যদি কোনও সমস্যা হয়, কোনও বিশেষ সংগঠনের সদস্য এসে যদি তাঁদের হুমকি দেয়, সেই দায়িত্ব কিন্তু আমি নিতে পারব না।’
উল্লেখ্য, গত কয়েকমাস ধরে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে অত্যাচারের শিকার হচ্ছে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকরা। তাঁদের উপরে হামলা চালানো হচ্ছে, মারধর করা হচ্ছে, এমনকী লুটপাটও চালানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে অনেক সময় স্থানীয় পুলিশেরও সাহায্য পাচ্ছেন না নির্যাতিতরা। এ বিষয়ে আগেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তৃণমূল সরকার। ভিনরাজ্যে আক্রান্ত বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম। কয়েকজনকে রাজ্যে ফেরতও আনা হয়েছে। পাশাপাশি এ বিষয়ে কেন্দ্রের উপর চাপ তৈরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি পাঠিয়েছেন সাংসদ সামিরুল ও ইউসুফ পাঠান। সম্প্রতি বাংলার পরিয়াযী শ্রমিকদের উপরে হামলার ঘটনা নিয়ে ওড়িশা ও গুজরাতের দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরি। এই সকল ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন বহু সংগঠন ও সংস্থাও।