উত্তরবঙ্গ সফর বাতিল করে বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা আকাশপথে দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী

শনিবার সারারাত নবান্নের কন্ট্রোল রুমে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিনিয়ত তিনি নিজেই যােগাযােগ রাখছিলেন জেলাশাসকদের সঙ্গে।

Written by SNS Kolkata | November 11, 2019 2:18 pm

বুলবুলের প্রভাবে রাজ্য জুড়ে বৃষ্টি। (Photo: Kuntal Chakrabarty/IANS)

বুলবুলের তাণ্ডবে পশ্চিমবঙ্গের দুর্গত মানুষদের পাশে দাঁড়ালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের দাপটে কী ক্ষতি হয়েছে, তা জানার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন। দিয়েছেন পাশে থাকার আশাস। রবিবার সকালে টুইট করে একথা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি। টুইটে তিনি লেখেন, সাইক্লোনের দাপটে পূর্ব ভারতের কী অবস্থা, সে সম্পর্কে খোঁজ নিলাম। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হল। ওনার সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাব রাজ্যে কীরকম পড়েছে তা নিয়ে কথা হল। আমি আশ্বাস দিয়েছি, যদি সাহায্যের প্রয়ােজন হয় কেন্দ্র পাশে রয়েছে। সবার সুরক্ষার প্রার্থনা করছি।

পাশাপাশি, টুইট করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি টুইটে লেখেন, পূর্ব ভারতের ঘূর্ণিঝড় বুবুলের উপর নজর রাখছি। আমরা সবসময় রাজ্যে ও কেন্দ্রের ত্রাণ মােকাবিলা এজেন্সিগুলির সঙ্গে যােগাযােগ রাখছি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছি। আমি ঈশ্বরে কাছ প্রার্থনা করছি এই পরিস্থিতিতে সবাইকে সুরক্ষিত রাখার জন্য।

তিনি আরও বলেন, ওড়িশায় ৬টি এবং পশ্চিমবঙ্গে পাঠানাে হয়েছে ১০টি বিপর্যয় মােকাবিলা দলকে। আরও ১৮টি দলকে তৈরি রাখা হয়েছে, প্রয়ােজনে তাদের পাঠানাে হবে।

শনিবার সারারাত নবান্নের কন্ট্রোল রুমে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিনিয়ত তিনি নিজেই যােগাযােগ রাখছিলেন জেলাশাসকদের সঙ্গে। কোথাও কোনও খবর পেলেই তড়িঘড়ি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন সচিব থেকে সেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার প্রশাসনিক আধিকারিকদের। বুলবুলের তাণ্ডবে দক্ষিণবঙ্গের ৯টি জেলায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার রিপাের্ট রবিবার দুপুরেই নবান্নে এসেছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত সাড়ে ২৯ হাজারের মতাে বাড়ি আংশিক বা পুরােপুরি ক্ষতি হয়েছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলের।

ক্ষয়ক্ষতি এবং ঝঞ্ঝা পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সােমবার আকাশপথে নামখানা এবং বকখালির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একটি টুইট করে তিনি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে কাকদ্বীপে বৈঠকও করবেন।

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জেরে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা মােকাবিলা করার জন্য তিনি রাস উৎসব উপলক্ষে পূর্বনির্ধারিত উত্তরবঙ্গ সফর ছিল, তা আপাতত পিছিয়ে দিয়েছেন। পরদিন অর্থাৎ ১৩ নভেম্বর মঙ্গলবার উঃ ২৪ পরগনার বসিরহাটে যাবেন ক্ষয়ক্ষতি দেখতে। দক্ষিণবঙ্গের যে ৯টি জেলায় বুলবুলের প্রভাব পড়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে।

নবান্ন সূত্রে খবর, এই তিন জেলায় ঝড়ের দাপটে বহু জায়গায় উপড়ে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি, তার ছিড়ে বিদ্যুৎ পরিসেবাও বন্ধ রয়েছে। সর্বত্রই জেলা প্রশাসন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বিদ্যুৎ পরিসেবা স্বাভাৰ্কি করার চেষ্টা করছে। গােটা রাজ্যে বুলবুলের তাণ্ডবে ১০ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে প্রাথমিকভাবে। সবকটি মৃত্যুর কারণ বুলবুলের জন্য কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাজ্যের বিপর্যয় মােকাবিলা দফতরে মন্ত্রী জাভেদ খান রবিবার বিকেলে জানান, এখনও পর্যন্ত বুলবুলের তাণ্ডবে ৭ জনের মৃত্যুর নিশ্চিত খবর পাওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় চার লক্ষেরও বেশি মানুষ।