• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

অপরিকল্পিত ও বিপজ্জনক, এসআইআর স্থগিতের অনুরোধ জানিয়ে কমিশনকে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর

দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি লিখে এসআইআর প্রক্রিয়া স্থগিত করার অনুরোধ জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (File Photo: IANS)

দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি লিখে এসআইআর প্রক্রিয়া স্থগিত করার অনুরোধ জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে এই প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। একে বিপজ্জনক বলেও বর্ণনা করেছেন তিনি। এই অপরিকল্পিত প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় রাজ্যজুড়ে ভয় ও বিভ্রান্তি বাড়ছে। সম্প্রতি রাজ্যে দুই বুথ লেভেল অফিসার তথা বিএলও–র মৃত্যু হয়েছে।
তাঁদের মধ্যে একজন আত্মহত্যা করেছেন। আর এক বিএলও গুরুতর অসুস্থ। এসআইআরের কাজের চাপেই এই ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিএলওদের প্রশিক্ষণেরও অভাব রয়েছে বলে দাবি করেন মমতা। নির্বাচন কমিশনারকে লেখা চিঠিতে বিএলও মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে এসআইআর প্রক্রিয়া স্থগিত করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, এসআইআর প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় নথি সম্পর্কে রয়েছে অস্পষ্টতা। এই প্রক্রিয়া কাঠামোগতভাবে ত্রুটিপূর্ণ। বিএলও–র শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মমতা জানিয়েছেন, বিএলও–দের উপর অত্যধিক চাপ তৈরি করা হচ্ছে। পাশাপাশি এসআইআরের কারণে মানসিকভাবে চাপে রয়েছেন সাধারণ মানুষও। পর পর এত আত্মহত্যার ঘটনা তারই প্রমাণ। এসআইআর প্রক্রিয়াকে হঠকারী সিদ্ধান্ত বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁর অনুরোধ, বিএলও–দের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদানের বিষয়টা বিবেচনা করা হোক। পাশাপাশি এসআইআর প্রক্রিয়ার সময়সীমাও পুনর্বিবেচনা করা হোক। এই প্রক্রিয়া অবিলম্বে সংশোধন করা না হলে তা সকলের জন্যই ক্ষতির বলে দাবি করেছেন মমতা। যে কাজ করতে সাধারণত তিন বছর সময় লাগে, সেটি মাত্র তিন মাসে শেষ করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। এই অযৌক্তিক চাপের কারণেই পরপর প্রাণহানি ঘটছে বলে তিনি দাবি করেন।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছে, বর্তমানে রাজ্যে ধান চাষের সময়। ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ব্যস্ততা চলবে। কৃষিক্ষেত্রের এই ব্যস্ত সময়ে এসআইআর প্রক্রিয়া চালানো অযৌক্তিক। এই সময় লক্ষ লক্ষ চাষি ও শ্রমিক কৃষিকাজে ব্যস্ত রয়েছেন। এই আবহে তাঁদের এসআইআর প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ছে। তাঁর আরও দাবি, ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে ফর্ম বিষয়ক সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ করা বাস্তবে সম্ভব নয়। এই তাড়াহুড়োয় বিএলও-রা চাপের মুখে ভুল ফর্ম আপলোড করতে বাধ্য হতে পারেন। এর ফলে প্রকৃত ভোটারদেরই বিপাকে পড়তে হবে।
সম্প্রতি, ডুয়ার্সের মাল ব্লকের নিউ গ্লেনকো চা-বাগান এলাকায় বাসিন্দা তথা বিএলও শান্তিমুনি ওঁরাও আত্মঘাতী হন। অভিযোগ, কাজের চাপে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। তাঁর অকালমৃত্যুতে নির্বাচন কমিশনকে দোষারোপ করেছেন মমতা। শান্তিমুনি ওঁরাওয়ের আগেও পূর্ব বর্ধমানের নমিতা হাঁসদা নামের এক বিএলও–র মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, এসআইআরের কাজের চাপে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
অন্যদিকে, এসআইআরের কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন হুগলির কোন্নগরের বুথ স্তরের আধিকারিক তথা বিএলও তপতী বিশ্বাস। যদিও তাঁকে কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বিএলও–র পাশাপাশি একাধিক সাধারণ মানুষও আতঙ্কে আত্মঘাতী হচ্ছেন। অসুস্থ হয়েও অনেকের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসছে। এই সব মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মমতা।

Advertisement

Advertisement