• facebook
  • twitter
Sunday, 14 December, 2025

রাজ্য সরকারের উদ্যোগের বিরোধিতা করলেও দুর্গাপুজোয় পুজো কমিটিগুলিকে অনুদান বিজেপির

বন্টনের দায়িত্বে মিঠুন চক্রবর্তী

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে রাজ্যে রাজনৈতিক তরজা ফের তীব্র হল। দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য সরকারের পুজো কমিটিগুলিকে অনুদান দেওয়ার বিরোধিতা করে এসেছে বিজেপি। এমনকি এই নিয়ে আদালতের দ্বারস্থও হয়েছিল গেরুয়া শিবির। অথচ ভোটের মরসুমে এবার নিজেদের ভাবমূর্তি ঘষামাজা করতে এবং পুজোর মঞ্চে প্রভাব বিস্তার করতে বিজেপি-ও মমতার পথ ধরে এগোচ্ছে। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব জেলায় জেলায় পুজো কমিটিগুলিকে অর্থ সাহায্যের সিদ্ধান্ত নিল। আর সেই অনুদান বিতরণের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হল দলের তারকা নেতা তথা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর হাতে।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগেও রাজ্যের ক্লাবগুলিকে টাকা পাঠিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু জেলায় টাকা পৌঁছনোর আগেই বিপুল পরিমাণ অর্থ মাঝপথে গায়েব হয়ে যায়। সেই টাকায় পকেট ভরেন দলের নেতারাই। অভিযোগ ওঠে, অনেক ক্লাবই এক পয়সাও হাতে পায়নি।

Advertisement

এমনকি যে সব ক্লাব টাকা পেয়েছিল, তাদের অনেকগুলির অস্তিত্বই পরে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই আর্থিক গরমিলের ঘটনাই এবার নেতৃত্বকে সতর্ক করেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনশলের নির্দেশে তাই এ বার সিদ্ধান্ত, কোনও জেলার নেতাদের হাতে টাকা তুলে দেওয়া হবে না। প্রতিটি পুজো কমিটির প্রতিনিধিদের সরাসরি এসে অনুদান সংগ্রহ করতে হবে। এভাবেই সম্ভাব্য তছরুপ আটকাতে চান বনশল।

Advertisement

তবে বিজেপির এই সিদ্ধান্তকে বিরোধীরা ‘দ্বিচারিতা’ বলেই কটাক্ষ করেছে। প্রশ্ন উঠছে, যে দল এতদিন রাজ্যের অনুদান নীতিকে বেআইনি বলে বিরোধিতা করেছে, তারাই কেন এবার একই পথে হাঁটছে? রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যের সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেদের যোগ আরও দৃঢ় করতে এবং ‘বাংলা বিদ্বেষী’ তকমা মুছতে চাইছে বিজেপি।

ইতিমধ্যেই বিজেপির উদ্যোগে ইজেডসিসি-তে দুর্গাপুজো আয়োজনের মাতামাতি শুরু হয়েছে। ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভার্চুয়ালি পুজো উদ্বোধন করেছিলেন। এ বার সেই দায়িত্ব নেবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যদিও রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এই পুজো বিজেপি করছে না। তাঁর দাবি, ‘পশ্চিমবঙ্গ সাংস্কৃতিক মঞ্চ’ নামে এক সংগঠন পুজোর আয়োজন করছে। যদিও উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছেন বিজেপি সাংস্কৃতিক সেলের সদস্যরাই।

দলের সাংস্কৃতিক সেলের আহ্বায়ক রুদ্রনীল ঘোষ দাবি করেছেন, ‘এই পুজোর বাজেট ৩০ লাখ টাকার বেশি নয়। কোনও অর্থ বিজেপির তহবিল থেকে আসছে না।’ কিন্তু বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া নেত্রী সঙ্ঘমিত্রা চৌধুরীর কটাক্ষ, ‘বিজেপি শুধু ভোটের সময়ই দুর্গাপুজো নিয়ে মাতামাতি করে। অন্য সময়ে এর কোনও খোঁজ থাকে না। এই আচরণই ওদের আসল মুখ দেখিয়ে দেয়।’

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই পদক্ষেপ বিজেপির ভোট কৌশলেরই অঙ্গ। তবে পুজোর ভিড়ে গেরুয়া শিবির কতটা জনমত কুড়োতে পারবে, সেটাই এখন দেখার।

Advertisement