নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমান, ১৫ জুন– নিজেও রক্তদান করেন। আবার সারা বছরই শিবিরের আয়োজন করে শয়ে শয়ে মানুষের কাছে রক্ত সংগ্রহ করে মুমূর্ষ রোগীদের জন্য পাঠানোর কাজ করে চলেছেন। পূর্ব বর্ধমান জেলার সেই সমাজসেবী মহম্মদ আসরাফউদ্দিন বাবুকে এবার বিশ্ব রক্তদাতা দিবসে সরকারি উদ্যোগে সম্মাননা জানানো হল। কয়েক বছর ধরে মানবিক এই কর্মকান্ডের জন্য তাকে পুরস্কার দেওয়া হল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর পক্ষ থেকে। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা জেলার সকলকে উৎসাহ যোগাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
শুক্রবার ছিল বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। আর এ দিনটি উপলক্ষ্যে কলকাতার স্বাস্থ্যভবনে একটি অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় ২০ জন বিশিষ্ট রক্তদাতাকে সম্বর্ধনাজ্ঞাপন করে। পূর্ব বর্ধমান থেকে মহম্মদ আসরাফউদ্দিনকে সংবর্ধনা ও পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। সারা জেলায় রক্তদান আন্দোলনের প্রাণ পুরুষ হিসেবে সকলেই তাকে ” বাবু ” নামে চেনেন। বাবুই একমাত্র ব্যক্তি ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। যিনি এখনও পর্যন্ত ১১৩ বার রক্তদান করেছেন। কিন্তু এটাই বড়ো কথা নয়, বর্ধমান ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সম্পাদক হিসাবে সারা বছরই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে রক্তদান শিবির চালিয়ে যান। গত কোভিডকালেও তার উদ্যোগে রক্তদান শিবির বন্ধ হয়নি। এর জন্য তিনি নিজে তো বটেই, সংস্থাও রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কয়েক হাজার ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পেরেছেন। বর্ধমান লায়ন্স ক্লাবের সদস্য মহম্মদ আসরাফ উদ্দিন অবশ্য রক্তদান শিবিরের পাশাপাশি সারা বছরই গরিব অসহায় মুমূর্ষ রোগীদের দিল্লি সহ বিভিন্ন রাজ্যে বিনা খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়ার মতো কাজও করেন।
Advertisement
সম্মানিত হবার পর আসরাফউদ্দিন বাবু বলেন, আমৃত্যু তিনি মানুষের প্রয়োজনে রক্তদান করে যেতে চান। শুধু রক্তদান নয়, সারা বছর জেলা সহ পার্শ্ববর্তী অন্যান্য জায়গায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে যেভাবে রক্তের সংকট মেটাতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন, সেই প্রচেষ্টা তাঁর থাকবে। এদিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তাঁকে সম্মান জানানোর জন্য আগামী দিনে এই মহৎ কাজে আরও উৎসাহিত করবেন বলে দাবি করেছেন বর্ধমান লায়ন্স ক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি প্রসেনজিৎ দত্ত।
Advertisement
Advertisement



