আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে বহুল আলোচিত নিয়োগ মামলার বিচারপ্রক্রিয়ার সূচনা হল। শুক্রবার প্রথম দিনের শুনানিতেই উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। আদালতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজির ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে, চোখে কালো চশমা পরে তিনি শুনানিতে অংশ নেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত ছিলেন অভিযুক্ত অশোক সাহা, এসপি সিংহ এবং প্রসন্ন রায়ও।
কিন্তু সবচেয়ে আলোড়ন তোলে এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যানের সাক্ষ্য। তিনি জানান, ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে তাঁকে চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। তবে মাত্র দু’বছরের মাথায়, ২০১৩ সালে তিনি পদত্যাগ করেন। কারণ হিসাবে তিনি আদালতে বলেন, ‘চাকরিতে বেআইনি নিয়োগের জন্য রাজনৈতিক চাপ আসছিল। সরাসরি মুকুল রায় এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের তরফ থেকে চাপ দেওয়া হয়েছিল। একদিন পার্থ আমাকে বাড়িতেও ডেকেছিলেন। কিন্তু আমি সেই চাপ মেনে নিতে পারিনি, তাই পদ ছেড়ে দিই।’
Advertisement
এই বক্তব্যে আপত্তি জানান বিবাদীপক্ষ। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী মন্তব্য করেন, ‘আমার মক্কেলের নাম এসেছে, তবে এটি সরাসরি নয়, পরোক্ষে। সেটি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকুক।’ অন্যদিকে সিবিআইয়ের আইনজীবীর দাবি, সাক্ষীকে অবাধে নিজের বক্তব্য রাখতে দেওয়া উচিত।
Advertisement
এদিন শুনানিতে সাক্ষীর রাজনৈতিক যোগ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। বিবাদীপক্ষ দাবি করে, তিনি ২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগ দেন এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ইস্তাহার প্রণয়নের দলের অংশ ছিলেন। তাই তাঁর সাক্ষ্য রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত। তবে প্রাক্তন চেয়ারম্যান স্পষ্ট জবাব দেন, ‘আমি কোনও রাজনৈতিক চাপে নই। আমি শুধু সত্যিটাই বলছি।’
সিবিআইয়ের আইনজীবী যখন বিভিন্ন প্রশ্ন তুলছিলেন, তখন বারবার হস্তক্ষেপ করতে হয় বিচারককে। প্রশ্নোত্তরকে কেন্দ্র করে কখনও বিবাদীপক্ষ, কখনও সরকারি আইনজীবীর সঙ্গে বিতর্ক হয় আদালতে।
প্রসঙ্গত, বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নাম নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। তবে সাক্ষীর দাবি, ‘ব্রাত্য বসুর কাছ থেকে কোনওরকম চাপ আসেনি।’ এই মামলার শুনানি শনিবারও চলবে। সেদিন এসএসসির আর এক প্রাক্তন আধিকারিককে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ডাকা হতে পারে। সোমবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত।
Advertisement



