মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের তরফে। দলত্যাগী বিরোধী আইন অনুযায়ী বিধিভঙ্গ করেছেন তিনি। এই অভিযোগেই কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক পদ থেকে সরানো হয় মুকুল রায়কে। হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে এবার চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন বিধানসভা সচিবালয়। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় বিধানসভার অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনায় বসেছিলেন বিধানসভার স্পিকার। পুরো বিষয়টি আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিধানসভা সচিবালয়ও হাই কোর্টের রায়ের উপর আপিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। আপিল দায়ের করলে মুকুল রায়ের বিধায়কপদ খারিজের রায় আপাতত স্থগিতও থাকতে পারে, এমন মত আইন বিশেষজ্ঞদের।
২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর মুকুল রায় তৃণমূল ছাড়েন। দলের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দেন। রাজ্যসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান ভেঙ্কাইয়া নাইডুর সঙ্গে দেখা করে সংসদের উচ্চকক্ষের সদস্য পদ থেকেও ইস্তফা দেন। কয়েক সপ্তাহ বাদে ওই বছরের ৩ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দেন মুকুল। ২০১৯ সালের লোকসভা ও ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে সামনে থেকে নেতৃত্বও দেন মুকুল। ২০২১ সালে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে জয়ী হন। তৃণমূল প্রার্থী কৌশানী মুখোপাধ্য়ায়কে পরাজিত করেন ৩৫ হাজারেরও বেশি ভোটে ৷
Advertisement
এরপর ওই বছরের ১১ জুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্যদের উপস্থিতিতে মুকুল রায় ও স্বপুত্র শুভ্রাংশু রায় তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসেন। খাতায় কলমে বিজেপি বিধায়ক হলেও তৃণমূলে নতুন করে যোগদান করেন মুকুল। ওই বছরের ২৫ জুন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায় তাঁকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি-র সদস্য নির্বাচিত করেন। পরে ৯ জুলাই বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়কে পিএসি-র চেয়ারম্যান করা হয়৷ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপি নেতা অম্বিকা রায়।
Advertisement
গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চতর আদালতে যেতে চান বিধানসভার স্পিকার। তবে বিধানসভার স্পিকার ও সচিবালয়ের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে তা দেখার বিষয়। উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস ধরে অসুস্থ হয়ে কলকাতার মেট্রোপলিটন বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন মুকুল রায়। রাজনীতি থেকে অনেকটাই দূরে রয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজে আপিল করা হবে কি না তা দেখার বিষয়।
Advertisement



