নাগরিকত্ব আইন বিরােধী প্রস্তাব আনা হচ্ছে বিধানসভায় : মমতা

নাগরিকত্ব সংশােধনী আইন (সিএএ) বিরােধিতায় চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই প্রস্তাব আনা হচ্ছে বিধানসভায়। একথা জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমাে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Written by SNS Kolkata | January 21, 2020 1:37 pm

তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (Photo: IANS)

নাগরিকত্ব সংশােধনী আইন (সিএএ) বিরােধিতায় চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই প্রস্তাব আনা হচ্ছে বিধানসভায়। সােমবার উত্তরবঙ্গ সফরে যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে একথা জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমাে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেরিতে হলেও বাম কংগ্রেসের এই প্রস্তাব না মেনে নেওয়ায় খুশি বিরােধী দলনেতা আবদুল মান্নান।

পাঞ্জাব এবং কেরলের পথে হেঁটে সংশােধিত নাগরিক আইন বিরােধী প্রস্তাব আনতে চলেছে তৃণমুল শাসকদল। সােমবার একথা জানিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিন চার মাস আগে বিধানসভায় এনআরসি এবং সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল (ক্যাব) বিরােধী প্রস্তাব পাশ করানাে হয়েছে। এবার সিএএ বিরােধী প্রস্তাব আনা হবে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। তিনি অন্য রাজ্য বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিকেও এইভাবে প্রস্তাব পেশ করার জন্য আবেদন জানান।

সিএএ-এর বিরােধিতায় প্রথম থেকেই আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিএএ পাশ হওয়ার পর রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছেন। এমনকী প্রধানমন্ত্রী যেদিন এই শহরে এসেছেন, সেদিনও এই ইস্যুতে ধর্মতলায় তৃণমূলের ধর্না মঞ্চে এই ইস্যু নিয়ে আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। রাজভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠকেও সরাসরি তাঁকে আবেদন জানিয়েছিলেন সিএএ প্রত্যাহারের জন্য।

সসামবার বিমানবন্দরে স্পষ্ট জানিয়ে দেন কোনওভাবেই এনপিআর করতে দেওয়া হবে না রাজ্যে। এনপিআর হল এনারসি’র প্রাথমিক ধাপ। সেখানে বাবা মায়ের জন্মস্থান এবং শংসাপত্রের বিষয়টি রাখা হয়েছে। এই সম্পর্কিত তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও এনপিআর প্রক্রিয়ায় এই তথ্য না দিতে পারলে সরকারি খাতায় ‘ব্ল্যাকলিস্টেড’ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলেই মনে করছেন মমতা। সেই কারণেই রাজ্যে এনপিআর’ও করতে দিতে চান না তিনি।

এই বিরােধিতাকে মান্যতা দিতে বিধানসভায় সিএএ বিরােধী প্রস্তাব আনতে চান তৃণমূল নেত্রী। এর আগে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে, বাম-কংগ্রেস বিরােধী দলের পক্ষ থেকে আর্জি জানানাে হয়েছিল কেরলের বাম সরকারের পন্থা অনুসরণ করে বিধানসভায় সিএএ বিরােধী প্রস্তাব পাশ করানাে হােক। সেই মতাে একটি লিখিত প্রস্তাব জমাও পড়েছিল স্পিকারের কাছে। কিন্তু সেই সময় শাসক দলের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, এনআরসি বিরােধী একটি প্রস্তাব আগেই নেওয়া হয়েছে বিধানসভায়। তাই নতুন করে বিরােধী দলের প্রস্তাব আনার প্রয়ােজন নেই।

বিষয়টি নিয়ে শাসক দলের সঙ্গে তরজাও বেধে যায় বিরােধী বাম-কংগ্রেস দলের বিধায়কদের সঙ্গে। এমনকী বাম-কংগ্রেসের শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকা বাংলা বন্ধের জন্য সােনিয়া গান্ধির ডাকা সিএএ বিরােধী বৈঠক বয়কটও করেন মমতা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন সেই বৈঠকে যােগ দিয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরির মতাে নেতা, তখন রাজ্যের বাম-কংগ্রেস দলের আর্জি মতাে সিএএ বিরােধী প্রস্তাব বিধানসভায় আনার সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।

মুখ্যমন্ত্রী ২৪ তারিখ উত্তরবঙ্গ থেকে ফেরার পর বিধানসভায় সিএএ বিরােধী প্রস্তাব আনা হবে বলে সূত্রের খবর। সােমবার বিরােধী দলনেতা আবদুল মান্নান বলেন, এই প্রস্তাবের কথা আমি এবং সুজন চক্রবর্তী বিধানসভায় এনেছিলাম। এটা আমাদেরই ক্লে চাইল্ড। শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের যে সুমতি হয়েছে, এই প্রস্তাব বিধানসভায় এনে পাশ করানাের জন্য, সেজন্য আমি খুশি। অন্যদিকে সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, যতক্ষণ না এই প্রস্তাব আনা হচ্ছে, ততক্ষণ বিশ্বাস নেই। বিজেপির পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, উনি (মমতা) আজ যা বলেন, পরের দিন তার উল্টো কথা বলেন।