• facebook
  • twitter
Thursday, 11 December, 2025

সুপ্রিম কোর্টেও জয় অনিকেত মাহাতোর

আরজি কর হাসপাতালেই পোস্টিং, দু’সপ্তাহের সময়সীমা রাজ্যকে

সুপ্রিম কোর্টে বড় জয় পেল আরজি কর আন্দোলনের মুখ অনিকেত মাহাতো। চিকিৎসক অনিকেতের পোস্টিং নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিল, রায়গঞ্জ নয়, অনিকেতকে পোস্টিং দিতে হবে আরজি কর হাসপাতালেই। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেকে মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি বিজয় বিষ্ণোইয়ের বেঞ্চ জানিয়েছে, হাইকোর্টের রায়ের উপর কোনও হস্তক্ষেপ নয়। আরজি করের অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগেই পোস্টিং দিতে হবে অনিকেতকে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে ওই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে।

এদিন এই মামলায় প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্য সরকারকে। সকলের ক্ষেত্রে এসওপি মেনে তালিকা তৈরি হলেও, এক্ষেত্রে কেন ব্যতিক্রম হল তা নিয়ে বিচারপতিরা প্রশ্ন করেন। পাল্টা রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল যুক্তি দেন, একজন সরকারি কর্মী বা চিকিৎসক, নিজের পছন্দমতো জায়গা বেছে নিতে পারেন না।

Advertisement

চলতি বছরের মে মাসে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর অনিকেত মাহাতোকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে পোস্টিং দেয়। অনিকেতের দাবি ছিল, এই সিদ্ধান্ত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি এই পোস্টিং নিতে অস্বীকার করেন। কলকাতা হাইকোর্টে যান অনিকেত।

Advertisement

সেপ্টেম্বর মাস অনিকেতের পোস্টিং নিয়ে রাজ্যের সিদ্ধান্ত খারিজ করে দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ নয়, আরজি করেই অনিকেতকে পোস্টিং দেওয়ার কথা বলা হয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর বা এসওপি মেনে চলা হয়নি। এছাড়া সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারা অর্থাৎ সমানাধিকারের ধারাও অমান্য করার কথা বলা হয়।

সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে বিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চও সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রাখে। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। অনিকেতের আরজি করে পোস্টিং রুখতে সুপ্রিম কোর্টে স্পেশ্যাল লিভ পিটিশন দাখিল করা হয়। এবার শীর্ষ আদালতও কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখল।

আরজি কর আন্দোলনের মুখ ছিলেন তিন চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো, দেবাশিস হালদার এবং আসফাকুল্লা নাইয়া। তিন জনকেই চলতি বছরের মে মাসে কলকাতা থেকে দূরে পোস্টিং দেওয়া হয়। অনিকেতকে রায়গঞ্জ, দেবাশিসকে মালদহের গাজোল এবং আসফাকুল্লাকে হুগলির আরামবাগে পোস্টিং দেওয়া হয়। তাঁদের দাবি ছিল, এই পোস্টিং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এর বিরোধিতা করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অনিকেত। আলাদা করে মামলা করেন বাকিরাও।

যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পছন্দ মতো পোস্টিং যদি না পাওয়া যায়, তা হলে কাউন্সেলিং-এর প্রয়োজনীয়তা কী, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।  মেধাতালিকারই বা কী প্রয়োজন?  শুধু তা-ই নয়, মেধাতালিকায় বেছে বেছে শুধুমাত্র তাঁদের তিন জনকেই দূরে পোস্টিং দেওয়ার বিষয়টিকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক’ বলেও ব্যাখ্যা করেছিলেন তাঁরা।

রায়ের পর পোস্টিং নিয়ে অনিকেত জানিয়েছেন, ‘হাই কোর্টের রায়ে হয়নি, এ বার অন্তত সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে কাজে যোগ দিতে দেওয়া হোক। জনগণের অর্থ খরচ করে কপিল সিব্বলের মতো আইনজীবীকে নিয়োগ করতে টাকা খরচ না করে সেই টাকা জনস্বাস্থ্য খাতে খরচ করলে স্বাস্থ‍্য ব‍্যবস্থারও উন্নতি হবে। তাতে রাজ‍্য এবং রাজ‍্যবাসী, দুইয়েরই মঙ্গল।’

Advertisement