• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

আজ শাসক দল এগিয়ে থাকলেও শিলিগুড়ি নিয়ে রয়েছে আশঙ্কা

গণনা কেন্দ্রে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় রয়েছে সিসি ক্যামেরার নজরদারি। বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে আসানসোলের ৬৬ টি ওয়ার্ডে এগিয়ে বিজেপি।

প্রতীকী ছবি (File Photo: IANS)

রাজ্যের ৪টি পুরনিগমের ভোট গণনা আজ। এই চারটি পুরসভার তিনটিতে তৃণমূল কংগ্রেসের জয় সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও শিলিগুড়িতে বামেদের প্রত্যাবর্তন হবে কিনা, তা নিয়ে দোলাচল রয়েছে সব মহলে। বামেদের প্রত্যাবর্তন, নাকি পরিবর্তন, তা জানা যাবে আজ।

অন্যদিকে রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম পুরসভা আসানসোল। ১০৬টি ওয়ার্ডে ভোট হয়েছে এখানে। আসানসোল পলিটেকনিক কলেজে তৈরি হয়েছে স্ট্রং রুম। চলছে প্রস্তুতি। ৭টি ঘরে ৫৩ টি টেবলে দু’টি ধাপে ভোট গণনা হবে।

Advertisement

গণনা কেন্দ্রে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় রয়েছে সিসি ক্যামেরার নজরদারি। বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে আসানসোলের ৬৬ টি ওয়ার্ডে এগিয়ে বিজেপি।

Advertisement

তবে, রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে ফের তৃণমূল ক্ষমতায় আসায়, আসানসোলে বিজেপি আদৌ নিজেদের অস্তিত্ব কতটা বজায় রাখতে পারবে, তা জানা যাবে আজ। জিতেন্দ্র তিওয়ারি তৃণমূল কংগ্রেসে থাকাকালীন তিনি আসানসোল পুরসভার মেয়র হয়েছিলেন। দল বদলে তিনি এখন বিজেপিতে।

এবার তাঁর স্ত্রী পুরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একদিন এই জিতেন্দ্র তিওয়ারি বিরোধীদের ভাঙিয়ে তৃণমূলে এনেছিলেন। সেই তিনি এখন বিজেপিতে থেকে শাসক দলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আনছেন।

বিজেপি সাংগঠনিকভাবে আসানসোলে কোথায় দাঁড়িয়ে, তা জানা যাবে আজ। বিধানসভা নির্বাচনে আসানসোলে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস আশানুরূপ ফল করতে পারেনি।

আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বর্তমানে পদত্যাগ করে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। ইতিমধ্যে আসানসোল লোকসভার উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে কমিশন। ফলে, আসানসোলকে ঘিরে বিজেপির যে উত্থান হয়েছিল, তাতে ক্ষয় ধরেছে।

সেই সঙ্গে আসানসোলের অবৈধ কয়লা ব্যবসা বন্ধের সিবিআই এবং রাজ্য পুলিশের অভিযান জারি রয়েছে। এই সব ফ্যাক্টর আসানসোলের ভোট রাজনীতিতে কোনও প্রভাব ফেলল কিনা, তাও বোঝা যাবে আজ।

যদিও এবারও এই পুরনিগমে শাসক দলের পাল্লা ভারী। তবে, বিজেপির ভোট ব্যাঙ্ক কমে বামেদের দিকে যায় কিনা, তারও আঁচ পাওয়া যাবে এদিনের ভোট গণনায়।

বিধাননগর পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের জয় নিয়ে কোনও দোলাচল নেই। পরিবর্তন বলতে সেদিন সব্যসাচী দত্ত বিজেপির হয়ে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, সেই তিনি দলবদল করে তৃণমূলে।

বিধানসভা নির্বাচনের দিন কমলা রঙের আইসক্রিম খেতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেই সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী ফোন করেছে বলে তিনি সংবাদমাধ্যমকে দেখিয়েছিলেন।

এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। বিজেপির সব্যসাচী এখন শোভা পাচ্ছে জোড়াফুলে। বিধাননগর নিঃসন্দেহে অভিজাত এলাকা। এখানে শিক্ষিত মানুষদের বসবাস। কিন্তু ভোটের দিন ভুয়ো ভোটার এবং বহিরাগতদের দাপাদাপি বিধাননগরে আভিজাত্যে এবং সম্ভ্রমে দাগ লাগিয়েছে।

যদিও গতবারের নির্বাচনে যে ধরনের অশান্তি হয়েছিল, তা অনেকাংশে এড়ানো সম্ভব হয়েছে। এখন দেখার জার্সি বদল করে বিজেপি থেকে তৃণমূলে নাম লিখিয়ে সব্যসাচী কতটা লাভবান হতে পারে এই পুরভোটে।

সেই সঙ্গে বামেদের ভোটব্যাঙ্ক এককভাবে রক্তক্ষরণ কাটিয়ে উঠতে পারল কিনা, সেদিকেও নজর থাকবে আজ। ফলে এই পুরভোটকে ঘিরে শাসক দলের প্রার্থীদের মধ্যে যে ধরনের উত্তেজনা ও উন্মাদনা রয়েছে, তার ছিটেফোঁটা নেই আমজনতার মধ্যে।

কারণ অনেকেই বলছেন, একপেশে ম্যাচ হতে চলেছে। শুধু বিরোধীরা এই কঠিন সময়ে দাঁড়িয়ে কতটুকু অস্তিত্ব জানান দিতে পারল বা আগামী দিনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইকে উচ্চগ্রামে নিয়ে জনমতকে কতটা প্রভাবিত করতে পারল, তার হদিশ মিলবে এদিন।

অন্যদিকে চন্দনগরের কানাইলাল বিদ্যামন্দিরে তৈরি হয়েছে স্ট্রং রুম। চন্দননগর পুরসভার ৩৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে গতকাল ৩২ টিতে ভোট হয়েছে। ইভিএম রাখা হয়েছে স্ট্রং রুমে। বাইরে রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র বাহিনী। ভিতরে সিসি ক্যামেরায় নজরদারি। গালা দিয়ে সিল করা হয়েছে স্ট্রং রুমের দরজা।

শনিবার চার পুরনিগমের ভোটকে ঘিরে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায়। বিধাননগর ও আসানসোলে একের পর এক অভিযোগ ওঠে। বুথ দখলে বাধা দেওয়ায় বিজেপি প্রার্থীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ থেকে শুরু করে বুথের মধ্যে একের পর এক ঘটনা সামনে আসে।

এর পাশাপাশি কোথাও বুথে বহিরাগত ঢোকানোর অভিযোগ, কোথাও ভোটারদের লাইন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা, কোথাও ভোটারদের চা খাইয়ে প্রভাবিত করার অভিযোগও ওঠে।

শিলিগুড়ির বিধায়ক, প্রাক্তন মেয়র ও প্রাক্তন মন্ত্রী তিন হেভিওয়েট ওয়ার্ডে সকাল থেকে দফায় দফায় ছড়ায় উত্তেজনা। যদিও দু-একটি বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছাড়া, শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। চার পুরসভার ভোট নিয়ে জানায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

Advertisement