প্রায় দেড় মাস ধরে একটানা বৃষ্টিতে পূর্ব বর্ধমানে একদিকে যেমন চাষের ক্ষতি হয়েছে, একই সঙ্গে ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়ে আছে কয়েকশো ঘরবাড়ি। একের পর এক বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হলো জেলা প্রশাসনের তরফে। জেলাশাসক বিভিন্ন ব্লকে এ নিয়ে খোঁজ খবর করার পাশাপাশি সরেজমিন ঘুরে দেখেছেন। একই সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর তিনি যাবতীয় রিপোর্ট দিলেন নবান্নে। জেলাতে এবার একনাগাড়ে বৃষ্টির ফলে আমন ধান চাষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এবিষয়েও কৃষি বিপণন দপ্তরের সচিবের কাছেও রিপোর্ট পাঠানো হলো।
পূর্ব বর্ধমান জেলায় অবিরাম বর্ষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মাটির বাড়ির। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে বেশিরভাগ ব্লকেই কাঁচা বাড়ি ক্ষতির মুখে পড়েছে। বেশ কয়েকটি এলাকায় কাঁচা বাড়ি ভেঙ্গে পড়েছে। একই সঙ্গে বহু পুরনো বাড়িও ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কমপক্ষে প্রায় ৬০০ বাড়ি আংশিক ক্ষতির মুখে আছে। এছাড়াও ১৮০টির মতো বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আশঙ্কার কথা জানিয়ে নবান্নে চিঠি পাঠানো হলো। এর আগে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েষা রানী বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শন করেন। বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে বিশেষ করে মাটির বাড়ি দেখেন তিনি। ঘুরে দেখার সময় সরকারি আধিকারিকরাও সঙ্গে ছিলেন। গ্রামগুলিতে কাঁচা বাড়িতে বসবাস করা পরিবারের লোকজনকে প্রয়োজনে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাবার নির্দেশ দেন। বিডিও-দের সক্রিয় থাকার কথা বলা হয়। এর পাশাপাশি দামোদর ও অজয় নদের বাঁধ সংলগ্ন এলাকাগুলি সরেজমিন দেখেন জেলাশাসক।
Advertisement
দামোদর নদ লাগোয়া জামালপুর ব্লকের বেশ কয়েকটি এলাকায় বানভাসি হবার সম্ভাবনা বেশি। সেখানকার পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি ভূতনাথ মালিক ও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মেহেমুদ খানদের নিয়ে জেলাশাসক বাঁধ সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। মাটির বাড়িতে যারা বসবাস করছেন তাঁদের সঙ্গে কথাবার্তা বলা হয়। এরই মধ্যে মাধবডিহির ফতেপুরে একটি মাটির বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়ে। বিশ্বজিৎ ঘোষ এবং তাঁর পরিবারের লোকজন প্রাণে বাঁচলেও আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন। রায়না-২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সৈয়দ কলিমুদ্দিন জানালেন, পরিবারটিকে সব রকমের সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। বর্ধমান-২ ব্লকের গোবিন্দপুরেও একটি বহু পুরনো বাড়ি ভেঙে পড়েছে। শহর বর্ধমানের বীরহাটা এলাকায় একটি পুরনো বাড়ি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। যদিও হতাহতের কোনও খবর নেই । তবে যে সব বাড়ি ক্ষতির মুখে দাঁড়িয়ে আছে সেগুলোর প্রতি ব্লকে একজন করে অতিরিক্ত জেলাশাসক ও ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট পাঠাবে। সেই রিপোর্ট পাঠানো হবে নবান্নে।
Advertisement
Advertisement



