রাজ্যের ভূমি রাজস্ব দপ্তরে ব্যাপক আলোড়ন। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ১৯০ ভূমি আধিকারিককে বদলি করল নবান্ন। ব্লক ল্যান্ড অ্যান্ড রেভিনিউ অফিসার (বিএলএলআরও), স্পেশ্যাল রেভিনিউ অফিসার-২, জয়েন্ট ডিরেক্টর, অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর এবং ডেপুটি ডিরেক্টর, ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন পদে থাকা একাধিক গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিককে বদলি করা হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়-২, উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর-১ ও ২, সন্দেশখালি-২, হাবড়া-২, বজবজ-২, বসিরহাট-১, হাওড়ার পাঁচলা, পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট, পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম-১ এবং জলপাইগুড়ির মালবাজার-সহ রাজ্যের একাধিক ব্লকের বিএলএলআরও-দের বদলি করা হয়েছে। বার বার এই ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে প্রশাসনিক পরিকাঠামোয় গতি আনার পাশাপাশি দপ্তরের স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বজায় রাখতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্য প্রশাসন ভূমি দপ্তরের কাজে গতি আনার পাশাপাশি, স্বচ্ছতা বজায় রাখার পক্ষপাতী। তাই গত এক বছর ধরে আধিকারিকদের কাজকর্মের উপর পর্যবেক্ষণ করেই ধাপে ধাপে এই বদলি করেছে। কয়েক মাস আগেই প্রায় ৮০০ জন রাজস্ব আধিকারিক, জয়েন্ট ডিরেক্টর ও অন্যান্য পদাধিকারীকে বদলির নির্দেশ জারি হয়েছিল। এবার একই ভাবে আরও ১৯০ জন ভূমি দপ্তরের পদস্থ আধিকারিককে বদলি করা হল। এই নিয়ে গত এক বছরে ভূমি দপ্তরের প্রায় এক হাজার আধিকারিককে বদলি করা হয়েছে।
তবে কী কারণে রাজ্য সরকার এই বদলির সিদ্ধান্ত নিল, তা নিয়ে যথেষ্ট জল্পনা ছড়িয়েছে। এ ব্যাপারে নবান্ন সূত্রে খবর, বদলির এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রয়েছে একাধিক প্রশাসনিক কারণ। রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকরা বলছেন, বেশ কিছু ক্ষেত্রে দুর্নীতির জন্য শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হিসাবে বেশ কিছু আধিকারিককে দূরবর্তী বদলি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বেশ কিছু ক্ষেত্রে প্রশাসনিক দক্ষতা ও কাজে গতি আনতে বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আবার কিছু ব্লকে কাজের তুলনায় আধিকারিকের সংখ্যা কম ছিল, সেইসব এলাকায় কাজের গতি বাড়াতে আধিকারিকের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নবান্নের এই নির্দেশের ফলে বহু জেলায় যেমন শূন্য পদ পূরণ করা সম্ভব হয়েছে, তেমনি কিছু ব্লকে আবার প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত আধিকারিককে স্থানান্তরিত করে কাজে লাগানো সম্ভব হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ভূমি আধিকারিকদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর বদলি হওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু অনেক ব্লকে বেশ কিছু আধিকারিক তিন বছরের বেশি সময় ধরে কর্মরত ছিলেন। তাই রুটিন বদলির নীতি কার্যকর করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, বেশ কয়েকজন আধিকারিকের স্বাস্থ্যগত কারণে তাঁদের কাজের সুবিধা অনুযায়ী বদলি করা হয়েছে।