• facebook
  • twitter
Monday, 28 July, 2025

কাজের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়েছেন ১৭ লক্ষ মানুষ, বাংলা ছাড়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী

বাংলায় কাজ না থাকায় ভিন রাজ্যে কাজের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ, এই ইস্যুতে একাধিকবার সরব হয়েছেন বিরোধীরা।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

বাংলায় কাজ না থাকায় ভিন রাজ্যে কাজের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ, এই ইস্যুতে একাধিকবার সরব হয়েছেন বিরোধীরা। সোমবার একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে বিরোধীদের সেই দাবিকে নস্যাৎ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ইস্যুতে বিজেপিকে তোপ দেগে তাঁর দাবি, বিদেশ মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৭ লক্ষ ১০ হাজার ৮৯০ জন মানুষ দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। বছরে ২ কোটি চাকরি দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দিয়েছিলেন তা মিথ্যা বলে দাবি করেছেন মমতা। তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রের রিপোর্ট অনুযায়ী মাত্র ২২ লক্ষ চাকরি দেওয়া হয়েছে।

মমতার কথায়, ‘২ কোটি চাকরি কেন্দ্রের ভাঁওতা। আমরা বাংলার ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমিয়েছি।’ পাশাপাশি তিনি পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানিয়েছেন, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২৩ হাজার মানুষ দেশ ছেড়েছেন। ১৯ সালে দেশ ছেড়েছেন ৭ হাজার মানুষ। ২০২০ সালে ৫ হাজার, ২০২১ সালে ৭ হাজার ৫০০, ২০২২ সালে ৮ হাজার, ২০২৩ সালে ৫ হাজার, ২০২৪ সালে ৪ হাজার ৩০০, ২০২৫ সালে এখনও পর্যন্ত ৩ হাজার ৫০০ জন দেশ ছেড়েছেন। সবমিলিয়ে ১৭ লক্ষেরও বেশি মানুষ উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় দেশ ছেড়েছেন। বিদেশমন্ত্রক এই তথ্য দিয়েছে। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা আরও জানিয়েছেন, শিল্পপতিরা আরও বেশি করে বাংলায় আসছেন। কারণ বাংলায় ব্যবসা বাড়ছে। বাংলায় দেউচা পাচামি হচ্ছে, তাজপুর বন্দর হচ্ছে। তৃণমূল সরকার ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমিয়েছে। প্রায় ২ কোটি মানুষ দারিদ্র সীমার উপরে উঠেছে তাঁর জমানাতেই।

১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই নিহত ১৩ জন যুব কংগ্রেসের নেতা-কর্মীকে সম্মান জানানোর পাশাপাশি সোমবার মঞ্চে পহেলগামে মৃত ভারতীয় নাগরিকদেরও স্মরণ করেন মমতা। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে দেখা গিয়েছে পহেলগামে নিহত বিতান অধিকারীর বাবা–মা ও তেহট্টের শহিদ জওয়ান ঝন্টু আলি শেখের বাবাকে। দুই স্বজনহারা পরিবারের হাতে ১ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে মমতার গলায় শোনা গিয়েছে পহেলগামে জঙ্গি হামলা ও অপারেশন সিঁদুরের প্রসঙ্গ। কেন পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখল করা গেল না সেই প্রশ্ন তুলে মোদীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে বিঁধে মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘ আপনারা তো ট্রাম্পের কথায় চলেন। আপনাদের কন্ট্রোল করছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কেন পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখল করতে পারলেন না?’

বাংলায় অনুপ্রবেশ নিয়ে কুৎসা করেছে বিজেপি। অভিযোগ উঠছে, রাজ্যে ১৭ লক্ষ রোহিঙ্গা বাস করছে। এই ইস্যুতে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে পাল্টা তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রশ্ন, রাষ্ট্রসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সারা পৃথিবীতে রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লক্ষ। সেই সংখ্যা কিছুটা বাড়তে পারে।

সেক্ষেত্রে বাংলায় ১৭ রোহিঙ্গা এলেন কোথা থেকে? অনুপ্রবেশ ইস্যুতে ফের একবার মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন মমতা। ফের একবার তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব বিএসএফের হাতে। বিএসএফ কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। সেক্ষেত্রে অনুপ্রবেশ হলে তার দায় রাজ্য সরকারের উপর চাপানোর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, অনুপ্রবেশ হয়ে থাকলে তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অধীনে থাকা বিএসএফের জন্য।