অভিযোগ পেলেই মুখ্যমন্ত্রী জেলে ঢোকানোর ব্যবস্থা করেন: অভিষেক

Written by SNS March 21, 2024 12:39 pm

সন্দেশখালি প্রসঙ্গে কড়া বার্তা

নিজস্ব প্রতিনিধি– সন্দেশখালি কাণ্ডের পর বুধবার প্রথম ওই এলাকার লোকসভা কেন্দ্র বসিরহাটে পা রেখেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়৷ সন্দেশখালি-কাণ্ডে এবার কেন্দ্রীয় সংস্থার ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল সেনাপতি অভিষেক৷ সেখানেই তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে বাকি দলের পার্থক্যও বুঝিয়ে দিলেন তিনি৷ বুধবারে বসিরহাটের জনগর্জন সভা থেকে গর্জে ওঠেন অভিষেক, বসিরহাট মঞ্চ থেকেই সন্দেশখালি প্রসঙ্গে বার্তা দেন৷

অভিষেকের ভাষায়, সন্দেশখালি নিয়ে অনেক প্রতিবাদ হয়েছে, অনেক রাজনীতি হয়েছে৷ তবে অভিযুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস ব্যবস্থা নিয়েছে যেটা অন্য দলে হয় না৷ কেন্দ্রীয় সংস্থার দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘অভিযোগ পেলেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাদের জেলে ঢোকানোর ব্যবস্থা করে৷ কিন্ত্ত বাস্তবে সন্দেশখালিতে শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারের উপর নারী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে, তাদেরকে কেন সিবিআই হেফাজতে নেয়নি?’ অন্যান্য বিরোধীদলগুলির সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের আদর্শগত এবং নীতিগত পার্থক্যকেও স্পষ্ট করেছেন অভিষেক৷ তিনি বলেন, ‘পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা যদি কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, যদি কেউ ভেবে নেন যে পঞ্চায়েতে জিতেছেন বলে হাতির পাঁচ পা দেখেছেন- তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আমরা রেয়াত করি না৷ শেখ শাহজাহান থেকে সুদীপ্ত সেন এঁদের কাউকেই ইডি সিবিআই ধরেনি বরং মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পুলিশ ধরেছে৷’

এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিষেকের অভিযোগ, বিজেপির সাংসদ ব্রিজভূষণ সিংয়ের বিরুদ্ধে কুস্তিগীররা শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছে৷ তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার পরিবর্তে বড় বড় পদ দিয়ে মঞ্চ আলোকিত করে বসিয়ে রাখা হয়েছে৷ এমনকি বিজেপির কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে পকসো মামলায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে, বিজেপি তাঁকে দল থেকে বহিস্কার করা দূর তাঁর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ পর্যন্ত নেয়নি৷ তাঁর কথায়, যেদিন থেকে শেখ শাহজাহান গ্রেফতার হয়েছে সেদিন থেকে সংবাদমাধ্যম, রাজনৈতিক দলের নেতারা সন্দেশখালি যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে৷ এর কারণ? সেটিরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন যুবরাজ৷ তিনি বলেন, ‘বিজেপির উদ্দেশ্য নারী সুরক্ষা নয়, বিজেপির উদ্দেশ্য মানুষকে ভুল বুঝিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল করা৷’

বর্তমানে বাংলার রাজ্য রাজনীতি অন্যতম ভরকেন্দ্র সন্দেশখালি৷ নানা জল্পনার অবসান ঘটেছে শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারির মাধ্যমে৷ আপাতত সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন তিনি৷ সন্দেশখালিও শান্ত হয়েছে৷ জেলবন্দি হয়েছেন শেখ শাহজাহানের দুই শাগরেদ শিবু হাজরা ও উত্তম সর্দার৷ সন্দেশখালি নিয়ে সম্মিলিত বিরোধীদের একের পর এক আক্রমণের লক্ষ্য হয়েছে শাসকদল তৃণমূল৷ উত্তরবঙ্গ থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছিলেন তৃণমূল যুবরাজ৷ সন্দেশখালি ঘটনার পর বুধবার তিনি প্রথমবার পা রেখেছেন বসিরহাটের মাটিতে৷ এবার সেখান থেকে কেন্দ্র তথা কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন৷ তৃণমূলের রাজনৈতিক আদর্শ কতটা শক্তিশালী তা বুঝিয়ে দিলেন অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিকেও৷ দলমত নির্বিশেষে, অপরাধ করলে যে শাস্তি নিশ্চিত বসিরহাটের মঞ্চ থেকে তার প্রমানও দিলেন অভিষেক৷