বছর তিনেক আগের কথা। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মৃত্যু হয় এক জুনিয়র চিকিৎসকের। এতদিন পর পরিবারের তরফে আদালতে দায়ের হল মামলা। ছেলের মৃত্যু নিয়ে আসল তথ্য জানতে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হল আদালতে। আর এই ঘটনা সামনে আসতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে।
পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমার পূর্বস্থলীর নাদনঘাটের বাসিন্দা ২৩ বছরের মোবারক হোসেনের দেহ মিলেছিল কলেজ হোস্টেল চত্বরেই। কলেজের তিন নম্বর হোস্টেলের নিচে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। পরিবারের তরফে শুরুতেই খুনের অভিযোগ তোলা হয়। কিন্তু পুলিশ জানায়, মদ্যপ অবস্থায় বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
Advertisement
এতদিন পর আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে দেশব্যাপী আন্দোলন দেখে ছেলের মৃত্যুর আসল কারণ জানতে আদালতের দারস্থ হন পরিবারের সদস্যরা। মৃত ওই জুনিয়র ডাক্তারের বাবা শেখ হাফিজুল ইসলাম দাবি করেন, মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক রিপোর্ট ও ময়নাতদন্তে ছেলের দেহে কোনও অ্যালকোহল মেলেনি। তা সত্ত্বেও ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। অভিযোগ, হাউস স্টাফ হিসাবে কাজে যোগ দেওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু ঘটে। বাবা ও পরিবারের আরও দাবি, মোবারককে সরিয়ে ওই জায়গায় অন্য কাউকে সুযোগ দিতেই তাঁকে মেরে ফেলা হয়। মোবারকের মাথায়,সারা দেহে একাধিক ক্ষতচিহ্ন ছিল। কর্তৃপক্ষের তরফে ফোন করার আগে বন্ধুরাই বাড়িতে খবর দেয়। তাই তাঁর মৃত্যুর রহস্যের কিনারা চেয়ে দোষীদের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার পরিবার।
Advertisement
যদিও প্রথমবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার পর সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সিআইডির উপর পরিবারের আস্থা নেই। তাই তদন্তের রিপোর্ট সহ কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হল পরিবারের তরফে। প্রতিবেশীরাও চাইছেন এই ঘটনায় আসল অপরাধীদের সামনে আনা হোক। অন্যদিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ওই ছাত্রের মৃত্যুর পর পুলিশ তদন্ত চালিয়েছে। তার রিপোর্ট রয়েছে। তবে পরিবারের তরফে কিছু জানানো হলে তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।
এদিকে আরজি কর ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই মোবারকের মৃত্যু কেন ধামা চাপা পড়ে যায় তা নিয়ে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কলেজ ক্যাম্পাসে। এক শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা সরব হতে শুরু করেছেন। কোনও প্রভাবশালী গোষ্ঠীর দাপটে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে দুর্নীতি এবং হুমকির শিকার হয়ে মোবারককে খুন হতে হয়েছিল কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
Advertisement



