জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সম্প্রতি দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে চেয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে আরটিআই করলেন রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের এক অধ্যাপক।
ওই অধ্যাপকের নাম ডা. বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রায়গঞ্জ মেডিক্যালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের জেরে রাজ্যে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই তথ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিদ্যুৎবাবু। ২৯ জনের সবাই সরকারি হাসপাতাল বা মেডিক্যাল কলেজে মারা গিয়েছেন কি না সেই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর আরও প্রশ্ন, এই তথ্য মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে দিলেন? এই বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি কোনও তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর চেয়ে আরটিআই করেন বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি এদিন বলেন, ‘আমাদের রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান দাবি করেছেন বিনা চিকিৎসায় ২৯ জন মানুষ মারা গিয়েছেন। এটা আমার সবৈব মিথ্যা বলে মনে হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছেন এটা ভয়ঙ্কর অস্বাভাবিক বিষয়। তবে দাবি যখন উনি করছেন তখন আমি জানতে চেয়েছি ওদের মৃত্যুর শংসাপত্রে কী লেখা আছে, এতগুলো যে মৃত্যু হয়েছে সরকারের তরফে কোনও তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন কি না। এই মৃত্যুর বিষয় কে কনফার্ম করেছেন? এইগুলো সব জানতে চেয়ে আরটিআই করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ক্রিটিক্যাল অবস্থায় থাকলে সরকারি হাসপাতালে এমনই রোগী মারা যান। সেই মৃত্যুগুলোকে রাজনৈতিক কারণে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করতেই এসব বলা হয়েছে।’
Advertisement
উল্লেখ্য, মৃত ২৯ জনের পরিবারের জন্য ২ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃতদের তালিকা নিয়ে আগেই চিকিৎসকরা সরব হয়েছিলেন। রাজ্যের দাবি অস্বীকার করেছিলেন তাঁরা। ২৯ জনের মধ্যে একজন হলেন বালুরঘাটের এক শিশু শিবম শর্মা। তাঁর পরিবার রাজ্যের দেওয়া ক্ষতিপূরণ প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছিলেন, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের সঙ্গে শিবমের মৃত্যুর কোনও সম্পর্ক নেই। চিকিৎসায় গাফিলতিতে তার মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে সাংসদ সুকান্ত মজুমদার প্রশ্ন করেন, ‘আমার জেলায় কোনও মেডিক্যাল কলেজ নেই, তাহলে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জন্য সেখানে কারও মৃত্যু হতে পারে কী করে?’
Advertisement
Advertisement



