হরিয়ানার হাথনি কুণ্ড বাঁধ থেকে প্রতি ঘণ্টায় জল ছড়ার ফলে আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে বিপদসীমা ছুঁতে চলেছে যমুনার জল। রবিবার দিল্লিতে বন্যার আগাম সতর্কতা জারি করল বন্যা নিয়ন্ত্রণ দফতর।
এদিন দুপুর ১২টা নাগাদ যমুনার জলস্তর ২০৩.৩৭ মিটার পর্যন্ত পৌঁছ। ২০৪.৫ মিটারের চিহ্নিত বিপদসীমার মাত্র ১.১৩ মিটার নীচে দেখা গিয়েছে নদীর জলস্তর। জানা গিয়েছে, গত শনিবার ভারী বর্ষণের পরেও বাঁধ থেকে জল ছাড়া হয়। হিসেব মতে, রাজধানীর পানীয় জল যােগানকারী হাথি কুণ্ড জলাধার থেকে দিল্লিতে জলস্রোত পৌঁছতে সময় লাগে ৭২ ঘণ্টা।
Advertisement
বন্যা নিয়ন্ত্রণ দফতরের এক কর্তা জানিয়েছে দফতরের তরফে পরিস্থিতির বিবরণ দিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উদ্দেশে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রতি মুহুর্তে পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। এদিকে দিল্লি ও সংলগ্ন অঞ্চলে শনিবার থেকেই লাগাতার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এদিন সকাল ৮.৩০ পর্যন্ত মােট ৬৫.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে রিজ অবজার্ভেটরি। আগামী ২৪ ঘন্টায় অবিরাম বর্ষণের পূর্বাভাস করেছে আবহাওয়া দফতর।
Advertisement
অতিবৃষ্টির জেরে বিধ্বস্ত উত্তর ভারত। কোথাও সৃষ্টি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি তাে কোথাও নামছে ধস। যার জেরে বিপর্যস্ত জনজীবন।
উত্তর ভারতের চার জেলায় জারি করা হয়েছে বন্যা সতর্কতা। দিল্লি, পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এই চার রাজ্যে তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। যার জেরে সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। এই চার রাজ্য মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩০। এদিকে ভারীবৃষ্টির জেরে ফুসছে যমুনা। বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে এই নদী। দিল্লিতে নিচু এলাকাতে থাকা মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
হিমালয় পর্বত সংলগ্ন উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশ সবথেকে বেক্ষি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। উত্তরাখণ্ডে ভয়ঙ্কর বন্যায় ভেসে গিয়ে ২০টি বাড়ি। নিখোঁজ ১৮ জন। তবে নিখোঁজের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। ভেসে গিয়েছে দোকানপাটও। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ জন। গারওয়াল ও কুমায়ুন অঞ্চলে আরও ভারী বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস জারি করেছে মৌসম ভবন। যার ফলে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে, ফুসছে অলকানন্দাও। প্রচুর পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, পুরি গরওয়াল, চামােলি, নৈনিতাল, বাগেশ্বর। চামােলিতেই মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৫ জনের।
এদিকে হিমাচলপ্রদেশে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৫। এদের মধ্যে অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে সিমলাতে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, রবিবার সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে হিমাচলে। যার পরিমাণ ১০২.৫ মিলিমিটার। চলতি বছর পয়লা জুন থেকে শুরু হয়েছে এই মৃত্যুমিছিল। জানা গিয়েছে, গােটা দেশে এই সময়ে বন্যা, ধস ও বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১,০৫৮ জনের।
Advertisement



