রাজ্যসভায় পাস হয়ে গেল মােটর ভেহিকলস বিল । ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করানাে এবং ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করলে কড়া জরিমানার মাধ্যমে ট্রাফিক আইনকে আরও পােক্ত করতেই এই বিল।
উচ্চকক্ষে মােটর ভেহিকেলস (সংশােধনী) বিল, ২০১৯ পাস হল সড়ক পরিবহণ এবং হাইওয়ে মন্ত্রী নীতিন গড়কডির তিনটি সংশােধনী সহ। পক্ষে ১০৮টি ভােট পড়ে বিপক্ষে ভােট পড়েছিল ১৩টি। বিলটি আগে লােকসভায় পাশ করানাে হয়েছিল ২৩ জুলাই। কিন্তু বিলটি আবারও লােকসভায় ফেরত যাবে একটি ‘টাইপাে’ তথা মুদ্রণপ্রমাদের কারণে।
Advertisement
এই বিলে প্রস্তাবিত হয়েছে পণ্য এবং যাত্রী পরিবহণ সংক্রান্ত জাতীয় পরিবহণ নীতির কথা। মন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা বলেই এটি তৈরি করা হবে। এই বিল আইনে পরিণত হলে নতুন যানবাহন ডিলার পর্যায়েই রেজিস্ট্রেশন হয়ে যাবে। ক্রেতাদের রেজিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনও যােগাযােগ করতে হবে না।
Advertisement
আগের বার এই বিল রাজ্যসভায় অনুমােদনের জন্য পড়েছিল। পরে ষােড়শ লােকসভার সমাপ্তিতে তা বাতিল হয়ে যায়। এই বিল অনুযায়ী, আপৎকালীন যানবাহনকে রাস্তা না ছাড়লে ১০ হাজার টাকা জরিমানা হবে। চালকের যােগ্যতা অর্জন না করে গাড়ি চালালেও ১০ হাজার টাকা দিতে হবে জরিমানা বাবদ। ড্রাইভিং লাইসেন্সে কারচুপি করলে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে।
গতির ক্ষেত্রে জরিমানার অঙ্ক ১০০০-২০০০ টাকা। বিমা না করে গাড়ি চালালে জরিমানা হবে ২০০০ টাকা। হেলমেট না পরলে দিতে হবে ১০০০ টাকা জরিমানা ও তিন মাসের জন্য লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত হবে। ১৮টি রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রীদের পাঠানাে প্রস্তাব থেকেই এই বিল গঠন করা হয়েছে।
কোনও নাবালক সড়ক আইন ভাঙলে গাড়ির মালিক নাবালকের অভিভাবককে দোষী সাব্যস্ত করা হবে সেক্ষেত্রে জরিমানা দিতে হবে ২৫ হাজার টাকা। সেই সঙ্গে তিন বছরের জেল এবং গাড়ির রেজিস্ট্রেশন বাতিল। ট্রাফিক আইন ভাঙলে এবার ১০০ টাকার পরিবর্তে ৫০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে।
কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করলে আগে ৫০০ টাকা জরিমানা হত। এখন তা বেড়ে ন্যনতম ২০০০ টাকা করা হয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে, ৫০০০ টাকা জরিমানা হবে এবং যে চালকদের গাড়ি চালানাের যােগ্যতা থাকবে না, তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।
বিপজ্জনক ড্রাইভিংয়ের ক্ষেত্রে জরিমানার অঙ্ক ১ হাজার থেকে বেড়ে ৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালালে দিতে হবে ১০ হাজার টাকা জরিমানা। গাড়িতে অতিরিক্ত মাল নিলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা।
বৃহস্পতিবার বিল পাস করানাের সময় গডকড়ি বলেন, কেন্দ্র রাজ্যগুলির মত সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তিনি এও জানান, রাজ্য শুল্ক বাবদ প্রাপ্ত অর্থ থেকে কোনও অংশই নেবে না কেন্দ্র। পাশাপাশি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলির নির্মাণের অধিকারও রাজ্যের কাছেই থাকবে।
এই আইনে ট্রাফিক সংক্রান্ত অপরাধের ক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৫ লক্ষ এবং ভয়ঙ্কর চোট লাগলে ২.৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের কথা বলা হয়েছে।
নীতিন জানিয়েছেন, ভারতে ২২ থেকে ২৫ লক্ষ চালকের ঘাটতি রয়েছে। সেই ঘাটতি পূরণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার প্রতি কেন্দ্রের জন্য ১ কোটি টাকা করে দিতে প্রস্তুত, যা থেকে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আরও বেশি করে খােলা সম্ভব।
Advertisement



