শেষ কবে কাকে চামচে করে তিনি মিষ্টি খাইয়ে দিয়েছেন, তাঁর পরিবারের সদস্যরাও স্মৃতি হাতড়ে বলতে পারবেন না। মঙ্গলবার সকালে দশ নম্বর রাজাজি মার্গে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখােপাধ্যায়ের বাসভবনে গিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। লােকসভা ভােটে একাই তিনশ পার করার পর এই প্রথম দেখা গেল মোদিকে চামচে করে মিষ্টি খাইয়ে দিলেন প্রণব। দু’জনের পারস্পরিক সম্পর্ক যে কত মধুর, তা ধরা রইল ফ্রেমে।
লােকসভা ভােটের ফল ঘােষণার দিনই মোদিকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখােপাধ্যায়। সে টুইট নজর কেড়েছিল অনেকেরই। প্রণব লিখেছিলেন, ‘একশ তিরিশ কোটি মানুষের আশা ও আকাঙক্ষা আপনি বহন করে চলছেন। ভগবান আপনাকে এগিয়ে চলার শক্তি দিন।’ তারপর দুজনের ফোনেও কথা হয়েছিল একপ্রস্থ।
Advertisement
এরপর মঙ্গলবার সকালে দশ নম্বর রাজাজি মার্গে প্রণববাবুর সঙ্গে দেখা করতে আসেন মােদি। দু’জনের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ আলাচনা হয়। দ্বিতীয় মেয়াদের কর্মসূচি, প্রথম মেয়াদের খামতির বিষয়গুলি নিয়ে প্রণবের পরামর্শও নেন মােদি। মােদি-প্রণবের সম্পর্ক নিয়ে ইদানীং জাতীয় রাজনীতিতে আলােচনার শেষ নেই।
Advertisement
মতাদর্শগতভাবে ভিন্ন মেরুতে থাকা দুই রাজনীতিকের মধ্যে এমন আস্থার সম্পর্ক সর্বভারতীয় স্তরে বিরলও বটে। তবে প্রণব-ঘনিষ্ঠরা অনেকে বলেন, এই সম্পর্কের ভিত গাঁথা হয়েছিল পাঁচ বছর আগে। চোদ্দর লােকসভা ভােটে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল বিজেপি। তারপর প্রথম যেদিন রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখােপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন নরেন্দ্র মােদি, পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সেদিনটাই নাকি মাইলফলক।
রাষ্ট্রপতি সচিবালয়ে সে সময়ে প্রণববাবুর আস্থাভাজন এক আমলা জানিয়েছিলেন, প্রথম সাক্ষাতেই মােদির বিনয়ে নাকি মুগ্ধ ছিলেন রাষ্ট্রপতি। মােদি নাকি প্রণববাবুকে বলেছিলেন, দিল্লিতে সরকার পরিচালনায় ও সাংবিধানিক বিষয়ে আপনার অগাধ পাণ্ডিত্য। সুতরাং আমাকে পথ দেখানাের দায়িত্ব আপনারই। কখনও কোথাও ভুল হলে শুধু একটা ফোন করবেন। আমি তক্ষুনি আপনার কাছে চলে আসব। তারপর থেকে পারস্পরিক সম্পর্ক ক্রমশই মজবুত হয়েছে।
কেন্দ্রে তাঁর প্রথম মেয়াদের শেষে প্রণববাবুকে ভারতরত্ব পুরস্কারেও সম্মানিত করেছেন মােদিই। সন্দেহ নেই, এতে কংগ্রেস পরিবারে অনেকেই অখুশি শুধু তাই নয়, সর্বভারতীয় কংগ্রেসের অনেক নেতার সঙ্গে এর ফলে প্রণববাবুর দূরত্বও এখন অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।
Advertisement



