গত পাঁচ বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি একবারও সরাসরি কোনও সাংবাদিক বৈঠক করেননি।এই নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধি বার বার কটাক্ষ করেছেন প্রধানমন্ত্রীকে।কিন্তু ১৭ মে শুক্রবার তিনি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে নিয়ে দিল্লির বিজেপি সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করলেও সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি,বরং সেই প্রশ্নগুলি বুদ্ধি করে ঠেলে দিয়েছেন অমিত শাহের দিকে। প্রধানমন্ত্রীর দিকে প্রথম প্রশ্নটি ধেয়ে আসতেই তিনি বলেন,’আমি একজন আজ্ঞানুবর্তী সৈনিক।আমার দলীয় সভাপতি আমার কাছে সবকিছু।এর পরেই প্রশ্নকর্তাকে অমিত শাহ জানিয়ে দেন,তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন।তিনি পাশে বসে আছেন। এরপরেই প্রশ্নকর্তাকে মােদির পাশে বসা অমিত শাহ জানিয়ে দেন এটা জরুরি নয় যে প্রধানমন্ত্রীকে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।এখানেই কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনের ইতি।কিন্তু এরপরেও সাংবাদিক বৈঠক ছেড়ে না গেলেও প্রধানমন্ত্রী তাঁর নিজের স্টাইলে গড়গড়িয়ে বক্তৃতা করে গেলেন সাংবাদিকদের সামনে।সেই একই চিরাচরিত দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে রইল মােদির পাঁচ বছরে প্রথম তথাকথিত সাংবাদিক বৈঠক,যার মিল খুঁজে পেলেন সাংবাদিকরা গত দুমাস ধরে চলা ২০১৯ সালের লােকসভা নির্বাচনী প্রচারে মােদির জনসভার সঙ্গে।
সংবাদমাধ্যমের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি নিজের এবং নিজের দলের প্রতি আস্থা রেখে জানিয়ে দেন বিজেপি ২০১৯ সালে ২০১৪ সালের চেয়ে আরও বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসছে।বহুকাল পরে পরপর দুবার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফের তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসতে চলেছে।২০১৪ সালের নির্বাচনের ফের উল্লেখ করে মােদি বলেন,সেবার ১৭ মে (২০১৪ সালে)একটি সৎ সরকার ক্ষমতায় এসেছিল।সাট্টা বাজারে যারা কংগ্রেসের উপর বাজি ধরেছিল, তারা পথে বসেছিল সেদিন।
Advertisement
এরপর তিনি তার নিজের ভােট প্রচারকে সফল বলে জানান।বিগত দুটি নির্বাচনে আইপিএলের খেলা পর্যন্ত করানাে যায়নি।কিন্তু সরকার মজবুত হলে আইপিএল , রমজান মাস এবং স্কুলের পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করা গেছে।মােদি বলেন,গত পাঁচ বছরে বহু উত্থানপতন ঘটেছে দেশে,কিন্তু দেশ আমার পাশে দাঁড়িয়েছে।ভারতে এটাই শাসনের নতুন সংস্কৃতি এবং এটাই গণতন্ত্রের প্রকৃত শক্তিও বটে।অমিত শাহের সাংবাদিক বৈঠকে হঠাৎ প্রধানমন্ত্রীর আগমনে হতচকিত হন সবাই।আশা ছিল রাহুল গান্ধির কটাক্ষের জবাব দিতেই এদিন স্বতঃপ্রণােদিত হয়ে মােদি সাংবাদিক বৈঠক করে গত পাঁচ বছরের অভাব সুদেআসলে মিটিয়ে দেবেন। কিন্তু সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতে না পেরে হতাশ হলেন।রাহুল গান্ধি মােদির সাংবাদিক বৈঠককে কটাক্ষ করে ফের এদিন বলেন,’ এক্সেলেন্ট প্রেস কনফারেন্স, মােদিজি ‘।
Advertisement
এরপর হাল ধরেন বিজেপির প্রেসিডেন্ট অমিত শাহ।সংবাদমাধ্যমের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপি প্রেসিডেন্ট বলেন,শুক্রবার বিজেপির নির্বাচনী প্রচার সাফল্যের সঙ্গে শেষ হয়েছে।বিজেপি আরও বেশি মানুষের সমর্থন পেয়ে ফের ক্ষমতায় আসছে। স্বাধীনতার পর এটাই ছিল সর্ববৃহৎ নির্বাচনী প্রচার।মােদি শাসনের পাঁচ বছরের সামগ্রিক সাফল্যের কথা তুলে ধরেন অমিত শাহ।
রাফায়েল যুদ্ধবিমান ক্রয় চুক্তি নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে অমিত শাহ বলেন,সেই চুক্তি নিয়ে কোনও দুর্নীতি হয়নি।আমি এ বিষয়ে সমস্ত প্রশ্নের জবাব দিয়েছি।এরপর প্রধানমন্ত্রীর এই সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার প্রয়ােজন নেই কারণ এই ধরনের অভিযােগের কোনও ভিত্তি নেই বলে মন্তব্য করেন অমিত।
Advertisement



