• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

অভিযােগ বিজেপির বিরুদ্ধে ত্রিপুরায় সিপিএমের অফিসে আগুন

ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ত্রিপুরা। বিধানসভা নির্বাচন হতে এখনও অনেকটা সময় বাকি। তবে তার আগেই এই রাজ্যে রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়ছে।

ত্রিপুরায় সিপিএমের অফিসে আগুন (Photo:SNS)

ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ত্রিপুরা। বিধানসভা নির্বাচন হতে এখনও অনেকটা সময় বাকি। তবে তার আগেই এই রাজ্যে রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়ছে। সিপিএম-বিজেপি সংঘর্ষে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের কেন্দ্র ধনপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে বুধবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা।

এদিন উদয়পুরে বিজেপি কর্মীকে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযােগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। বেলা বাড়ার পর পাল্টা বিজেপিও সিপিএমের একাধিক দলীয় কার্যালয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। সিপিএমের ত্রিপুরা রাজ্য দফতর ও একাধিক এলাকায় আগুন লাগিয়ে দিয়েছে বিজেপি, এমনটাই অভিযােগ।

Advertisement

আগরতলার মেলার মাঠে সিপিএমের রাজ্য দফতর দশরথ দেব স্মৃতি ভবনে আগুন নেভাতে এলাকায় পৌঁছয় দমকল। এর পাশাপাশি, ত্রিপুরায় সিপিএমের একাধিক পার্টি অফিসে আগুন ধরানাে হয়েছে। আগরতলায় ভানু ঘােষ স্মৃতি ভবন, বিশালগড় মহকুমা অফিসে আগুন লাগানাে হয়। সংবাদমাধ্যমের গাড়িতেও ভাজুর চালানাে হয়।

Advertisement

গেরুয়া শিবিরের অভিযােগ, সিপিএম গত ২৫ বছর ধরে ত্রিপুরায় সন্ত্রাস চালিয়েছে। সিপিএমের হার্মাদ বাহিনী এখনও তাণ্ডব চালাচ্ছে। ২০১৮ সালে ত্রিপুরার মানুষ সিপিএমকে উৎখাত করে। তা সত্ত্বেও এদিন উদয়পুরে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের নেতৃত্বে যেভাবে সিপিএম সন্ত্রাস চালালাে, তাতে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ। সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ হল জনরােষ, যা এদিন আছড়ে পড়েছে।

এদিকে সিপিএমের রাজা সম্পাদকমণ্ডলীর অভিযােগ, ৮০ সালেও সন্ত্রাস দেখেছে ত্রিপুরা। পার্টি অফিসে আগুন লাগিয়ে সিপিএমকে রােখা যাবে না। আগামী ১৫ তারিখ যে ছাত্র-যুব সমাবেশ আছে, তাতেই বিজেপি বুঝে যাবে, মানুষ কার সঙ্গে রয়েছে। ফের আরেকবার সিপিএম-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হল ত্রিপুরা। দুপক্ষের সংঘর্ষে জখম হয়েছে একাধিক ব্যক্তি।

একটি ভাইরাল ফুটেজে দেখা গিয়েছে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের ঝাণ্ডা মুড়ে সেই ডান্ডা দিয়ে এক বিজেপি কর্মীকে রাস্তায় ফেলে মারধাের করা হচ্ছে। সেই বিজেপি কর্মীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে।

এবার সিপিএমের বিরুদ্ধে হামলার অভিযােগ তুলে বিজেপির বক্তব্য, লাল সন্ত্রাস চলেছে উদয়পুরে। মানুষ যাদের প্রত্যাখ্যান করেছে তারা গায়ের জোরে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে। পালটা বামেদের বক্তব্য, কাজের দাবিতে শান্তিপূর্ণ যুব আন্দোলনকে তিনদিক থেকে ঘিরে ফেলে হামলার ছক করেছিল বিজেপি।

কর্মীরা তার প্রতিরােধ করেছে এই প্রসঙ্গে সিপিএম নেতার বক্তব্য, প্রশাসন নীরব থাকার কারণেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন চাইলে আগেই পারত বিজেপির জমায়েতকে সরিয়ে দিতে। এদিন ১৪ দফা দাবিতে উদয়পুরে মিছিল ও সমাবেশ করার পরিকল্পনা নিয়েছিল ডিওয়াইএফআই ও টিওয়াইএফ-এর। এর জন্য উদয়পুরে সিপিএমের মহকুমা অফিসে জমায়েত শুরু করেন বাম কর্মীরা।

সূত্রের খবর বিজেপিও এদিন পালটা জমায়েত করতে শুরু করে। সিপিএম অফিসে ভিড় বাড়তে থাকায় বিজেপিও জমায়েত বাড়িয়ে দেয়। এক বাম ছাত্র নেতা জানিয়েছেন প্রথমে পার্টির নেতারা নিষেধ করেছিলেন আজকে কর্মসূচি করতে।

কিন্তু কর্মীরা নেতাদের সাফ জানিয়ে দেয় কর্মসুচি হবেই। কর্মীদের জেদের কাছে হার মানতে হয় সিপিএম নেতাদের। এরপর পার্টি অফিস থেকে সিপিএমের জমায়েত রাস্তায় নেমে আসে। তাড়া করে বিজেপির লােকজনকে। একজন বিজেপি কর্মীকে একা পেয়ে মারধর করে বাম সমর্থকরা। ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে।

সিপিএমের পাল্টা দাবি, বিজেপির ছোড়া ইটের ঘায়ে তাদেরও এক কর্মীর মাথা ফেটে গিয়েছে। তবে গােটা ঘটনাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। উদয়পুরে বামেদের এদিনের কর্মসূচি পূর্ব নির্ধারিত ছিল। তা সত্ত্বেও কেন প্রশাসন আগাম কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সেই নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। এর আগে ধনপুরেও সিপিএমের বিরুদ্ধে হামলার অভিযােগ তুলেছিল বিজেপি।

সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি এই হামলার বিরােধিতা করছে বলে জানালেন লিবারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পার্থ ঘােষ। বুধবার সন্ধ্যায় লিবারেশনের নেতা পার্থ ঘােষ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির তরফে এক প্রেস বিবৃতি দিয়ে ত্রিপুরার বুকে ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরােধ গড়ে তুলতে হবে বলে জানান।

তিনি আরও বলেন, “লিবারেশনের ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি আজ বিকেল নাগাদ আগরতলায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সংগঠিত করে। এর কিছুক্ষণ পরেই আগরতলায় সিপিএমের রাজ্য দফতর দশরথ ভবন ও আগরতলা জেলা অফিস এবং ডেইলি দেশের কথা অফিসে হামলা ও আগুন লাগানাে হয়। এই ঘটনার বিরুদ্ধে শুধু ত্রিপুরা নয়, পশ্চিমবঙ্গ সহ বিভিন্ন রাজ্যে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।”

Advertisement